লাউয়াছড়া উদ্যানে মিলেছে নতুন ১৮ প্রজাতির প্রাণী

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


নভেম্বর ০৭, ২০২০
১০:১৮ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ০৭, ২০২০
১০:১৮ অপরাহ্ন



লাউয়াছড়া উদ্যানে মিলেছে নতুন ১৮ প্রজাতির প্রাণী
২০১১ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত চলা গবেষণার ফল

দীর্ঘমেয়াদী গবেষণায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ ও উভচর শ্রেণির প্রাণীর সন্ধান পেয়েছে গবেষণা দল। এর মধ্যে ১১টি প্রজাতির প্রাণীর অস্তিত্ব বাংলাদেশে নতুন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। এছাড়া লাউয়াছড়া বনে আগে ছিল এমন ২৩ প্রজাতির সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী পাওয়া যায়নি বলেও জানানো হয়েছে।

কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের উভচর ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীদের ওপর চালানো এক গবেষণায় এ তথ্য জানা গেছে। চলতি বছরের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক গবেষণাপত্র চেকলিস্টে এই গবেষণাটি প্রকাশ করা হয়েছে। 

বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের উদ্যোগে এবং ক্যারিনাম ও বাংলাদেশ বন বিভাগের সহযোগিতায় এই গবেষণাটি চালানো হয়। 

বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডেলটা স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ড. এ এইচ এম আলি রেজা তার পিএইচডি গবেষণায় লাউয়াছড়ায় ৪৫ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ১৫ প্রজাতির উভচর প্রাণীর সন্ধান পান। নতুন গবেষণায় ৫১ প্রজাতির সরীসৃপ এবং ২০ প্রজাতির উভচর প্রাণী শনাক্ত করা হয়। সর্বশেষ গবেষণামতে, এই জাতীয় উদ্যানে সর্বমোট ৭১ প্রজাতির উভচর ও সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীর সন্ধান মিলেছে। বাংলাদেশে নতুন প্রাপ্ত ১১টি সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীর বাংলা নামকরণ প্রক্রিয়াধীন আছে।

গবেষক দলের প্রধান বন্যপ্রাণী গবেষক শাহারিয়ার রহমান সিজার বলেন, 'আগের গবেষণায় যে ২৩ প্রজাতির প্রাণী লাউয়াছড়ায় আছে বলে বলা হতো সেগুলো আমাদের গবেষণায় ধরা পড়েনি। সেগুলো ভুলভাবে শনাক্ত করা হয়েছে ধরে নিয়ে আমরা তা লিস্ট থেকে বাদ দিয়েছি। যেহেতু আমরা মাঠপর্যায়ে কাজ করেছি, তাই যা পেয়েছি তাই শুধু সংযুক্ত করেছি।'

লাউয়াছড়া বনে আগের যে গবেষণাকর্ম ছিল সেগুলোর ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, যার কারণে অনেক প্রজাতির প্রাণী ভুলভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে এমন তথ্য জানিয়ে বন্যপ্রাণী গবেষক শাহারিয়ার রহমান সিজার বলেন, 'উভচর শ্রেণির প্রাণীদের মধ্যে ১৯ প্রজাতির ব্যাঙ এবং মাত্র ১ প্রজাতির সিসিলিয়ান জাতীয় প্রাণী পাওয়া গেছে। সরীসৃপ শ্রেণির মধ্যে পাওয়া গেছে ২ প্রজাতির কচ্ছপ, ১৪ প্রজাতির টিকটিকি (২ প্রজাতির গুইসাপসহ) এবং ৩৫ প্রজাতির সাপ, যার মধ্যে রয়েছে মাত্র ৬ প্রজাতির বিষাক্ত সাপ। এই প্রজাতিগুলোর মধ্যে রাজ গোখরা, অজগর ও পাহাড়ি হলুদ কচ্ছপ রয়েছে।'

গবেষক দল জানায়, বনের মধ্যে পানিসহ প্রতিবেশগত সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রাণীদের আবাসস্থল নষ্ট হয়েছে। তাতে আগামী কয়েকবছর পর বেশ কিছু প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, 'সম্প্রতি গবেষণাপত্রটি পেয়েছি। পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।'

 

এসডি/আরআর-১৬