ভারতে করোনায় যমজ ভাইয়ের মৃত্যু

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ১৮, ২০২১
০৬:২০ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ১৮, ২০২১
০৬:২১ অপরাহ্ন



ভারতে করোনায় যমজ ভাইয়ের মৃত্যু

১৯৯৭ সালের ২৩ এপ্রিল। এ দিনের কথা রেমন্ড রাফায়েলের এখনো মনে আছে। কারণ, এদিনে তাঁর স্ত্রী সোজা জন্ম দিয়েছিলেন যমজ ছেলেসন্তান। রেমন্ড এ দুজনের নাম রেখেছিলেন জোফ্রেড ভার্গিজ গ্রেগরি ও রালফ্রেড।

জোফ্রেড ও রালফ্রেডের বেড়ে ওঠা, পড়ালেখা—সবই একসঙ্গে। তাঁরা দুজনই পড়াশোনা করেছেন কম্পিউটার প্রকৌশলে। আর চাকরিও নিয়েছিলেন একই সঙ্গে ভারতের হায়দরাবাদে। আর মৃত্যুও হলো একসঙ্গে। মৃত্যুর কারণ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ।

টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জোফ্রেড ও রালফ্রেডের বাবা রেমন্ড বলেন, তাঁদের একজনের সঙ্গে যা ঘটে, অন্যজনের সঙ্গে ঠিক তা–ই ঘটে। এটা জন্মের পর থেকেই হয়ে আসছে। তিনি জানান, জন্মের ঠিক ২৪ বছর ১ দিন পর একই দিনে, অর্থাৎ গত ২৪ এপ্রিল তাঁরা দুজনই করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর ১৩ মে একজন মারা যান। এর কয়েক ঘণ্টা পর ১৪ মে আরেকজন মারা যান।

রেমন্ড বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম, জোফ্রেড মারা গেছে। রালফ্রেডও একা আর বাড়ি ফিরতে পারবে না। এর কয়েক ঘণ্টা পরই রালফ্রেড মারা যায়।’

তিনি বলেন, ‘ওরা দুজন আমাদের জন্য অনেক কিছু করার পরিকল্পনা করছিল। তারা আমাদের ভালো রাখতে চেয়েছিল। শিক্ষক হিসেবে আমরা অনেক কষ্ট করেছি ওদের বড় করার জন্য। ওরা তার প্রতিদান দিতে চেয়েছিল।’

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর প্রদেশের মিরাটের সেন্ট টমাস স্কুলের শিক্ষক রেমন্ড। তাঁর স্ত্রী সোজাও একই স্কুলের শিক্ষক।

জোফ্রেড ও রালফ্রেডের চিকিৎসা প্রথমে বাসায় রেখেই হচ্ছিল। রেমন্ড বলেন, ‘আমরা অক্সিমিটার কিনেছিলাম। একসময় লক্ষ করলাম, তাদের অক্সিজেন লেভেল ৯০-এ নেমে এল। তখন চিকিৎসক পরামর্শ দিলেন হাসপাতালে নেওয়ার। ১ মে দুজনকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।’ তিনি জানান, প্রথম পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ আসার পর দ্বিতীয় পরীক্ষায় (আরটি-পিসিআর) নেগেটিভ আসে।

রেমন্ড বলেন, ‘এরপর চিকিৎসকেরা পরিকল্পনা করছিলেন তাদের কোভিড ওয়ার্ড থেকে সাধারণ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়ার। আমি বলেছিলাম, তাদের আরও দুদিন কোভিড ওয়ার্ডে রেখে অন্য কোথাও নেওয়া হোক। কিন্তু ১৩ মে সবকিছু ভেস্তে যায়।’

রালফ্রেড মৃত্যুর আগে হাসপাতাল থেকে শেষ ফোনকলটি করেছিল তাঁদের মায়ের কাছে। রেমন্ড জানান, রালফ্রেড তাঁর মাকে বলেছিলেন, তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিন জোফ্রেডের স্বাস্থ্যের খবর জানতে চেয়েছিলেন। এরপর জোফ্রেড মারা যান। তিনি বলেন, ‘রালফ্রেডকে বলার জন্য আমরা একটা গল্প বানাই। আমরা তাকে বলি, জোফ্রেডকে দিল্লির হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে বুঝতে পেরেছিল, আমরা তাকে মিথ্যা বলছি। রালফ্রেড তার মাকে বলেছিল, “তোমরা মিথ্যা বলছ।”

বি এন-০৪