বড়লেখায় প্রবাসীকে হয়রানি ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ

বড়লেখা প্রতিনিধি


মে ২৯, ২০২১
১২:৩৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ২৯, ২০২১
১২:৩৪ পূর্বাহ্ন



বড়লেখায় প্রবাসীকে হয়রানি ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুম, হত্যা, হামলা, মামলা দিয়ে ফাঁসানো এবং মানসিক চাপ প্রদানের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুবাই প্রবাসী সাবুল আহমদ।

শুক্রবার (২৮ মে) বেলা আড়াইটায় বড়লেখা সদর ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে বড়লেখা পৌরসভার গাজিটেকা আইলাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে তিনি এসব অভিযোগ তোলেছেন।

সাবুল আহমদ বড়লেখা সদর ইউনিয়নের কেছরিগুল গ্রামের বাসিন্দা সাজ্জাদ আলীর ছেলে। সংবাদ সম্মেলনে সাবুল আহমদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান তার চাচাতো ভাই ফরহাদ হোসেন দুলাল। এ সময় প্রবাসী সাবুল আহমদ ছাড়াও তার বড়ভাই আবুল হোসেন আবু, ছোটভাই সাইফুল ইসলাম, আব্দুল কাদির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমি একজন মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। ২০০২ সাল থেকে প্রবাসে থাকি। মাতৃভূমির টানে প্রতিবছর নিজের বাবা-মা, ভাই-বোন, স্ত্রী ও দুই কন্যা এবং আত্মীয় স্বজন ও এলাকার মানুষকে দেখতে দেশে আসি। করোনা পরিস্থিতির কারণে সময়মতো কর্মস্থলে যেতে পারিনি। প্রবাস থেকে দেশে আসার পর বড়লেখা থানার গাজিটেকা আইলাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে সাইদুল ইসলামের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে তিনি আমার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ নেন। এর মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টাকা ফেরত দিলেও বাকি দেড় লাখ টাকা এখনও ফেরত দেননি। তিনি প্রবাস থেকে দেশে এলে আমাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যেতেন। সাম্প্রতিক সময়ে আমি তার সম্পর্কে ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য জানতে পেরে দূরত্ব বজায় রেখে চলার চেষ্টা করি এবং পাওনা টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য তাগিদ দেই। তিনি বার বার সময় নিলেও আমার পাওনা টাকা ফেরত দেননি। সম্প্রতি তিনি আমাকে সিলেটে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করলে আমার সন্দেহ হয়। পরে আমি জানতে পারি তিনি আমাকে সিলেটে নিয়ে ফাঁসিয়ে দিয়ে আমার পাওনা টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করছেন। তিনি আমাকে সিলেটে নিতে না পেরে হোয়াটসঅ্যাপে ভয়েস পাঠিয়ে বলেন, "তুই সিলেট ডিবি অফিসে গিয়ে আমার সম্পদ উদ্ধার করতে চাস না?" একপর্যায়ে তিনি আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, "সিলেটে তোর বাসা থেকে ডিবি ২ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে। এখন বাঁচবি কেমনে?" অথচ সিলেটে আমার কোনো বাসা নেই। সিলেটে আমার বাসা থাকলে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে মামলা হতো। এছাড়া তিনি আমাকে বলেন, ঢাকায় না কি মনির নামের একজন লোক খুন হয়েছে। সিআইডির সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে। আমি না কি সেই খুনের সঙ্গে জড়িত, আমি না কি তার কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঋণ নিয়েছি। আমি তার কথামতো না চললে তিনি আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সারাজীবন জেলে ঢুকিয়ে রাখবেন বলেন এবং নানাভাবে হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন ফেক আইডি থেকে আমার ও বিভিন্ন ব্যক্তির নামে অসত্য মানহানিকর তথ্য প্রচার করেছেন। এ ঘটনায় আমি আতঙ্কিত হয়ে গত ২৫ মে ফেসবুক লাইভে ঘটনার আংশিক ব্যাখ্যা করি এবং পরিবেশমন্ত্রী, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে বিস্তারিত ঘটনা জানাই। প্রাণনাশের ভয়ে গত ২৫ মে বড়লেখা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং-১২২০) করি।'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইদুল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে বলেন, হুমকি-ধমকির বিষয়টি সঠিক নয়। বরং আমি সাবুল আহমদের কাছে টাকা পাই। তিনি টাকা না দিতে এখন নানা টালবাহানা করছেন। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

এ ব্যাপারে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, হুমকি-ধমকির অভিযোগ এনে এক প্রবাসী থানায় জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।


এজে/আরআর-০৬