জৈন্তাপুরে পাঁচ গ্রামের মানুষের ভরসা নড়বড়ে এক 'হাকম'

রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর


জুন ০৬, ২০২১
০৬:২৮ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ০৬, ২০২১
০৬:৩১ অপরাহ্ন



জৈন্তাপুরে পাঁচ গ্রামের মানুষের ভরসা নড়বড়ে এক 'হাকম'

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ৫টি গ্রামের জনসাধারণ চলাচল করছেন একটি নড়বড়ে হাকম বা বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে। বহুদিন ধরে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও একটি সেতু জোটেনি তাদের ভাগ্যে। 

উপজেলা সদরের অন্যতম ও নিকটবর্তী ইউনিয়ন জৈন্তাপুর। এই ইউনিয়নের ৬ নএমবির ওয়ার্ডের মোয়াখাই, লামনীগ্রামের একাংশ, কাটাখাল, মুক্তাপুর, বিরাইমারা হাওর গ্রামের প্রায় ৬ হাজারের অধিক মানুষের বাস। বাঁশের তৈরি হাকম (সাঁকো) দিয়ে উপজেলা সদরের সঙ্গে চলাচল তাদের। অপরদিকে নিজপাট সদরের মেঘলী, বন্দরহাটি, লামাপাড়াসহ আশপাশের আরও ১০/১২টি গ্রামের লোকজন ফসলী জমিতে চাষাবাদের কাজে যাতায়াতের জন্য হাকমটি ব্যবহার করেন।

গ্রামবাসী দীর্ঘদিন ধরে নয়াগাং নদীর বোধাইর ভাঙ্গা নামক স্থানে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, তাদের দাবি পূরণ হচ্ছে না। প্রতিবছর নিজেদের অর্থায়নে বাঁশের তৈরি হাকম ব্যবহার করে উপজেলা সদর ও শহরে যাতায়াত করেন লোকজন। ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়গামী ছাত্র-ছাত্রী এবং গ্রামবাসীকে বাজারে আসা-যাওয়া করতে হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংসদ, উপজেলা, ইউনিয়ন নির্বাচন হলে প্রার্থীরা নিজেদের ভোট ব্যাংকে তাদের ভোট নিতে প্রতিবার সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে যান। কিন্তু ভোটের পর তাদের সেতু স্থাপনের দাবি আর পূরণ হয় না। দেখা মিলে না নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। প্রতিবছর বর্ষা শুরুর পূর্বে গ্রামবাসী অর্থ সংগ্রহ করে হাকম নির্মাণ করেন। 

এলাকার বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুর, ফখরুল ইসলাম, কাওছার আহমদ, হোলাল আহমদ, হীরা মিয়া, বাদশা মিয়া, সমছির মিয়া, কেশব শর্ম্মা ও বিকাশ শর্ম্মা সিলেট মিররকে বলেন, বোধাইর ভাঙ্গা নামক স্থানে সেতু না থাকায় উপজেলার মধ্যে আমরা উন্নয়নে পিছিয়ে রয়েছি। নির্মাণসামগ্রী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ব্যয় হয়। উপজেলার অন্যান্য গ্রামের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলে আমরা উন্নয়নবঞ্চিত রয়েছি। সেতুটি নির্মাণ হলে আমাদের কষ্ট দূর হবে। উপজেলা ও শহরের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ দ্রুত হবে।

জৈন্তাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান বলেন, বোধাইর ভাঙ্গায় সেতু নির্মাণের জন্য আমার পরিষদের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদে এবং স্থানীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে লিখিতভাবে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। 

উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর নয়াগাং নদীর বোধাইর ভাঙ্গা নামক স্থানে একটি সেতু নির্মাণের লিখিত প্রস্তাবনা দিয়েছি। সেতুটি নির্মাণের জন্য মন্ত্রী মহোদয় দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। কাটাখাল, লামনীগ্রাম একাংশ, মোয়াখাই ও মুক্তাপুর রাস্তার বিষয়টি উপজেলা উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।


আরকে/আরআর-০২