কমলগঞ্জে 'নার্সদের অবহেলায়' মৃত্যু, মা হারাল ১০ মাসের শিশু

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি


জুলাই ০১, ২০২১
১১:১৮ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ০১, ২০২১
১১:২০ অপরাহ্ন



কমলগঞ্জে 'নার্সদের অবহেলায়' মৃত্যু, মা হারাল ১০ মাসের শিশু

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সদের অবহেলায় সুমী বেগম (২৪) নামের এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। সুমী উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের মন্নান মিয়ার মেয়ে।

সুমীর স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজারের খলিলপুর ইউনিয়নের সরকারবাজার এলাকার এমরান মিয়ার স্ত্রী ১০ মাস বয়সী এক কন্যাসন্তানের জননী সুমী বেগমের পেটে ব্যথা শুরু হলে তাকে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন স্বজনরা। বৃহস্পতিবার সকালে মেডিকেল টেস্ট শেষ করে হাসপাতালের সাধারণ নারী ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়ার পর তার অবস্থার অবনতি হয়। তা দেখে সুমীর মা রাহেনা বেগম ও বাবা মন্নান মিয়া দায়িত্বরত চিকিৎসক ও সিনিয়র নার্সদের কাছে বার বার রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজারে নিয়ে যাওয়ার তাগাদা দেন। কিন্তু তাদের কথায় কর্ণপাত করেননি চিকিৎসক ও নার্সরা। দুপুর ১২টায় সুমীর অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে সিনিয়র নার্স অনিতা সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মন্ডল তার শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর থেকে সুমীর কোনো সাড়া না পেয়ে তার মা বার বার কর্তব্যরত নার্সদের বিষয়টি জানান। কিন্তু কর্তব্যরত নার্সরা বিরক্ত কণ্ঠে বলেন, 'রোগী ঘুমিয়ে আছেন, ডিস্টার্ব করবেন না'। বিকেলেও রোগীর নড়াচড়া না পেয়ে নার্সকে জানালে নার্সরা ডা. মুন্না সিনহাকে নিয়ে আসেন। তিনি পরীক্ষা করে সুমীকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত সুমীর মা রাহেনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য হাসপাতালের নার্স এবং কর্তব্যরত ডাক্তার দায়ী। আমরা তাদের বিচার চাই। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডা. মুন্না সিনহা ও মিডওয়াইফ রত্না মন্ডল জানান, মৃত রোগীর স্বজনরা আমাদের কাছে রোগীকে রেফারের জন্য বলেননি। আমাদের চিকিৎসার মধ্যে কোনো ত্রুটি ছিল না। প্রয়োজনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারেন।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সাজেদুল কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় যদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কেউ দায়ী থাকে তবে আগামীকাল (শুক্রবার) তদন্তক্রমে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলার পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম ভূইয়া বলেন, রোগীর পক্ষ থেকে মৌলভীবাজারে রেফারের জন্য আমার কাছে কেউ আসেনি। আমার জানামতে চিকিৎসার মধ্যে কোনো ত্রুটি ছিল না। তারপরও আগামীকাল নার্সদের সঙ্গে বসে বিষয়টিতে কোনো ত্রুটি আছে কি না দেখা হবে।


এসডি/আরআর-২২