রাত পোহালেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মহারণ

ক্রীড়া প্রতিবেদক


জুলাই ১০, ২০২১
০৮:৫৮ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১০, ২০২১
০৮:৫৮ অপরাহ্ন



রাত পোহালেই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মহারণ
কোপা আমেরিকা


ফুটবলে মাতোয়ারা এখন ফুটবলানুরাগীরা। মাসব্যাপী বিশ্বের দুই জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা শেষ হতে যাচ্ছে ১৮ ঘন্টার ব্যবধানে। একদিকে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল, অন্যদিকে কোপা আমেরিকার ফাইনাল। লন্ডনে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। রিও ডি জেনেরিওতে কোপা আরেরিকা। আজ রাত পোহালেই (বাংলাদেশ সময় রবিবার সকালে ৬টায়) কোপার ফাইনাল মহারণে নামছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। 

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ব্লকবাস্টার ম্যাচের সৌরভ ছড়াতে শুরু করেছে। কোপার খেলা নিয়ে এরই মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাতাহাতি মারামারি হয়ে হাসপাতাল, থানাপুলিশ গড়িয়েছে। এই আকাশে দু-এক জায়গায় ব্রাজিল আর্জেন্টিনার পতাকাও উড়তে দেখা যাচ্ছে। ঘটনার সংবাদ ছড়িয়ে পড়েছে দুনিয়াজুড়ে। ফাইনালের আগে মাঠের বাইরে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মধ্যে হাইভোল্টেজ ম্যাচ নিয়ে চলছে বাকযুদ্ধ।

ফাইনালের প্রস্তুতি শুরু করেছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। মারাকানায় খেলা হবে। ১ লাখ দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়াম ফাঁক থাকবে। তবে খেলোয়াড়দের পরিবারের দুজন করে স্টেডিয়ামে খেলা দেখার সুযোগ পাবেন। এছাড়াও থাকবে কোপার সব উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা। সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ অতিথি। ফাইনালের রেফারিও নির্ধারণ হয়ে গেছে। উরুগুয়ের রেফারি এস্তেবান উস্তেজিস। সেমিফাইনাল ম্যাচ ৯০ মিনিটে অতিরিক্ত ৩০ মিনিট ছিল না। ফাইনালে সেটি থাকবে। যদি ৯০ মিনিটে রেজাল্ট না হয়।

ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার মেসি বাহিনী চলে এসেছেন রিও ডি জেনেরিওতে এসেই। রিওতে, মারাকানায় ফাইনাল। তাই আগেই এই শহরের মাঠে অনুশীলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন আর্জেন্টিনার অন্য ফুটবলাররা। কলম্বিয়ার বিপক্ষে মূল একাদশে যারা খেলেছেন তারা বিশ্রামে থাকলেও ম্যাচ জয়ের নায়ক গোলকিপার ইমালিয়ানো মার্টিনেজ মাঠে অনুশীলন করলেন।

এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন এই মারাকানায় ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরেছিলেন। সেই ক্ষত এখনো শুকায়নি। এবার স্বাগতিকদের বিপক্ষে ফাইনালে মরণ-কামড় দিতে প্রস্তুতি নিলেও কোচ লিওনের স্কালোনির দুশ্চিন্তা ডিফেন্ডার কিস্তিয়ান রোমেরো। অন্যদিকে ব্রাজিলের গ্যাবরিয়েল জেসুসও খেলতে পারছেন না ম্যাচটা। আর্জেন্টিনা যখন রিওতে তখন নেইমাররা আছেন তেরেসোপোলিসে অনুশীলন মাঠে।

আর্জেন্টিনার হয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিরোপা জয় করাটা মেসির স্বপ্ন। যেটি দীর্ঘ ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। জাতীয় দলের হয়েও বার্সেলোনার স্টাইলে খেলছেন মেসি। গোল করছেন ফ্রি কিক থেকে। দ্রুততার সঙ্গে ঢুকে যাচ্ছেন প্রতিপক্ষের বক্সে। আবার বলের যোগানও দিয়ে চলেছেন সতীর্থদের। সতীর্থ খেলোয়াড় ডি পল বলেন, মেসি আমাদের সবার চেয়ে এক কদম এগিয়ে। সহায়তার জন্য তাকে বাড়তি একজন হিসেবে গণ্য করা হয়। আমরা সবাই তার অনুসারী। যেটি আর্জেন্টিনাকে বেশ ভালোভাবেই তুলে ধরছে এবং জয় এনে দিচ্ছে।

কোপা আমেরিকায় আক্রমণভাগের চেয়ে রক্ষণ দূর্গ দিয়েই সবাইকে আকৃষ্ট করে চলেছে ব্রাজিল। দলটির হয়ে একটি করে গোল করেছেন রিচার্লিসন ও রবার্তো ফিরমিনো। ফাইনালে নিষিদ্ধ হওয়া গাব্রিয়েল জেসুস এখনো পর্যন্ত গোলের দেখা পাননি।

এদিকে মেসির সুরক্ষা বলয় তৈরি করার কারণে আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের বাড়তি শক্তি ক্ষয় হয়ে হচ্ছে। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে তারা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ছে। আর তখন বেশী গোল করার সুযোগ লাভ করতে পারবে ব্রাজিল।

কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচটিই একমাত্র ম্যাচ, যেটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ানোর সম্ভাবনা প্রকট। ব্রজিলের এক দিন আগেই ফাইনালে পৌঁছেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের আগে অবশ্য রসালো মন্তব্য ফাইনালের চেহারাতে প্রভাব ফেলতে পারে। ব্রাজিলীয় তারকা রিচার্লিসন বলেছেন, কথা বলতে বলতেই ব্রাজিল আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে দিতে পারে। তিনি বলেন, আমরা পারব। ব্যাপারটি কথা বলতে বলতে ঘটে যাবে। এটি কথার কথা নয়, মাঠেও আমরা এর প্রমাণ দিতে পারব। আমরা তাদেরকে উত্তেজিত করে তুলব। সেটি সম্ভব।

২০১৯ সালের চেয়ে আসন্ন ম্যাচটির মধ্যে খুব বেশী একটা পার্থক্য নেই। ওই আসরের সেমি-ফাইনালে ব্রাজিল ২-০ গোলে আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় করে দিয়েছিল। ওই ম্যাচের গোল দুটি করেছিলেন গাব্রিয়েল জেসুস ও রবার্তো ফিরমিনো। ইনজুরির কারণে অবশ্য ওই ম্যাচে খেলতে পারেননি নেইমার।

এবারের সেমিতে টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার গোল রক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজও কলম্বিয় খেলোয়াড়দের উত্তেজিত করে তুলেছিলেন। তিনি প্রতিপক্ষের তিনটি শট রুখে দিয়ে ফাইনালে পৌঁছে দিয়েছেন দলকে। ভার্চুয়াল মঞ্চ থেকে ফাইনাল ম্যাচের উদ্বোধনীতে আর্জেন্টাইন রাস্ট্রপতি আলবার্তো ফার্নান্দেজ এর সঙ্গে যোগ দেবেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জাইর বলসোনারো।

এএন/০১