আজ রাতে ইংল্যান্ড ও ইতালির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই

ক্রীড়া প্রতিবেদক


জুলাই ১১, ২০২১
০৭:০৯ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১১, ২০২১
০৭:০৯ অপরাহ্ন



আজ রাতে ইংল্যান্ড ও ইতালির শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২০


ইউরোপিয়ান ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও ইতালি। আজ রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শিরোপা নির্ধারণী ম্যচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায়।

ইংলিশরা স্বপ্ন দেখছে ‘ফুটবল ঘরে ফেরানোর’। ইতালিয়ানরা টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় শিরোপা  জিতে রাজধানী রোমে উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায়। ইংল্যান্ড প্রথমবার উঠেছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ জয়ের পর কখনো এমন বড় আসরের ফাইনালে খেলা হয়নি ইংল্যান্ডের।

ইতালি চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। অথচ ইউরো জিতেছে মাত্র একবার। ১৯৬৮ সালে ঘরের মাঠে একমাত্র ইউরো জয়ের সুখস্মৃতি ইতালিয়ানদের। এরপর কেটে গেছে ৫৩ বছর। ২০০০ ও ২০১২ সালে ফাইনালে উঠলেও শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরা হয়নি। ইতালি শেষবার মেজর টুর্নামেন্ট জিতেছে ১৫ বছর আগে (২০০৬ বিশ্বকাপ)। ১৯৬৬ বিশ্বকাপ ইংল্যান্ড জিতেছিল ওয়েম্বলিতেই। পুরনো স্টেডিয়াম ভেঙে ২০০৭ সালে যাত্রা শুরু হয়েছে নতুন ওয়েম্বলির। প্রায় ৭০ হাজার দর্শকের সামনে নতুন ওয়েম্বলিতে আজ রাতে ইতিহাস গড়ার সুযোগ ইংল্যান্ডের। ইতালির কোচ রবার্তো মানচিনি ফাইনাল জিততে চান উপভোগ্য ফুটবল খেলে। তিনি বলেন, ‘ফাইনাল অন্য ম্যাচের চেয়ে আলাদা। ইংল্যান্ড খেলবে ঘরের মাঠে। প্রত্যাশার চাপ তাদের ওপরই বেশি থাকবে। আমরা নিজেদের খেলাতেই মনযোগী হতে চাই। তবে ফাইনাল জিততে হলে খেলতে হবে উপভোগ্য ফুটবল। আমরা লম্বা সময় একসঙ্গে খেলছি। তবে এখনো কিছুই জেতা হয়নি। রোববার (আজ) জিতে অপূর্ণতা ঘোচাতে চাই।’

২০১২ সালে স্পেনের কাছে ফাইনালে হারের দিন মাঠে ছিলেন জর্জো কিয়েলিনি। সেদিন কিয়েলিনি ইনজুরি নিয়ে ম্যাচের শুরুতেই মাঠ ছাড়েন। সেই ক্ষত ভুলতে চান বর্তমান ইতালি অধিনায়ক। বছরখানেক আগেও দলের মধ্যে বড় আসরের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ছিল না। সেই স্বপ্নটা দেখিয়েছেন কোচ মানচিনি। কোচের দেখানো পথে হেঁটে ফাইনালের মঞ্চে উঠে আবেগে ভাসছেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। কিয়েলিনি বলেন, ‘এবারের ইউরো আমাদের কাছে অন্যরকম এক আবহ নিয়ে এসেছে। শিরোপা জয়ের স্বপ্ন আমরা দেখছি ক’বছর ধরে। কোচ ধীরে ধীরে আমাদের মধ্যে স্বপ্নটা ঢুকিয়ে দিয়েছেন। তিনি আমাদের সব সময় বলতেন, ইউরো ২০২০ আমরাই জিতবো। আমরা ভাবতাম, কোচ পাগলামি করছেন। কিন্তু কোচ দারুণ একটা দল গড়ে স্বপ্ন পূরণের শেষ ধাপে দাঁড়িয়ে।’ ২০১৮ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনে ব্যর্থ হয় আজ্জুরিরা। সেই দলটাই তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে হারে না। অপরাজিত টানা ৩৩ ম্যাচ। যা ইতালিয়ান ফুটবল ইতিহাসে রেকর্ড। ইউরো বাছাইপর্ব ও মূল আসর মিলিয়ে ইতালি জিতেছে টানা ১৫ ম্যাচ। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে এমন কীর্তি কেবল ইতালির।

ইতালির স্বপ্নময় পথচলা জানেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউদগেটের। ফাইনালে কঠিন লড়াই হবে বলে মনে করছেন তিনি। ইংলিশ কোচ বলেন, ‘আমাদের প্রধান কাজ এখনো বাকি। সবচেয়ে কঠিন ম্যাচটা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। ইতালি দারুণ দল। কয়েক বছর ধরে তারা অসাধারণ খেলছে। রয়েছে দুর্দান্ত ছন্দে। রক্ষণে রয়েছে তাদের কয়েকজন লড়াকু যোদ্ধা। যারা দলের জন্য সবকিছু করতে পারে। ইতিহাসের অন্যতম সেরা ম্যাচ হতে চলেছে।’

বড় আসরে ফেভারিট দুই দল ফাইনাল খেলছে, এমনটা খুব কম সময়েই ঘটছে। ইতালি ও ইংল্যান্ড শুধু ফেভারিটই নয় দারুণ ছন্দেও রয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে ইতালি। শেষ ৬ ম্যাচের ৫টিতেই জিতেছে ইতালি। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ইংল্যান্ড-ইতালি শেষবার মুখোমুখি হয় ২০১৪ বিশ্বকাপে। আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ২-১ গোলে জেতে ইতালি। ইংল্যান্ড প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ইতালিকে শেষবার হারিয়েছিল ১৯৭৮ সালে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সেই ম্যাচে ইংল্যান্ড জিতেছিল ২-০ গোলে। ফিফা প্রীতিম্যাচ এবং প্রতিযোগিতামূলক খেলার ফলেও এগিয়ে ইতালি। ৩০বারের লড়াইয়ে ইতালি জিতেছে ১১ ম্যাচ। ইংল্যান্ডের জয় ৮টি। বাকি ১১ লড়াইহয় ড্র।

দু’দল শেষবার মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৮ সালে। ফিফা প্রীতি ম্যাচটি শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়। স্বাগতিক হিসেবে ইউরো জিততে পেরেছে এখনো পর্যন্ত মাত্র তিন দল। ১৯৬৪ সালে স্পেন, ১৯৬৮ সালে ইতালি ও ১৯৮৪ সালে ফ্রান্স। ২০১৬ সালে ফ্রান্স ঘরের মাঠে উঠেছিল ফাইনালে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের কাছে অতিরিক্ত সময়ের একমাত্র গোলে হেরে হৃদয় ভাঙে ফরাসিদের।

এএন/০৭