ছাদ বাগান ছড়িয়ে গেছে অজপাড়াগাঁয়েও

সাইফুল্লাহ হাসান, মৌলভীবাজার


আগস্ট ২৮, ২০২১
০৯:৫৩ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২৮, ২০২১
০৯:৫৩ অপরাহ্ন



ছাদ বাগান ছড়িয়ে গেছে অজপাড়াগাঁয়েও

ইট-পাথরের শহরে কম-বেশি সবার দালানের ছাদে বাগান দেখা যায়। কারণ ছাদ বাগান ছাড়া অন্য কোথাও গাছ লাগানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। তাই শখের বশে কিংবা নিজের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য শহরের মানুষ এ বাগান করে থাকেন। এ ছাদ বাগান এখন শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে। তেমন একটি ছাদ বাগানের দেখা মিলেছে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পূর্ব জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ছাদে। ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়া সবার নজর কাড়ছে এই ছাদ বাগানটি। 

সরেজমিনে ওই ইউনিয়ন পরিষদের গেলে দেখা যায়, সীমানা প্রাচীরের ভেতরে দুটি ভবন। এর মধ্যে একটি একতলা ভবনের ছাদে এ বাগনটি করা হয়েছে। বাগান পরিচর্যার কাজ করতে দেখা যায় ইউনিয়ন পরিষদের দফাদার বঙ্ক রুদ্রপালকে। তিনি বলেন, গত ২ বছর থেকে এই বাগানটি আমি পরিচর্যা করে আসছি। দেখাশোনা আমিই করি। প্রায় প্রতিদিনই অনেক দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসেন এখানে আমাদের বাগান দেখতে।

টবে দেখা যায় আম, পেয়ারা, আমড়া, লিচু, কমলা, মাল্টা, পেঁপে, লেবু, বরই, কামরাঙ্গা ইত্যাদি গাছ। এছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুল। বিশেষ করে সবার নজর কাড়ছে গাছে থাকা মাল্টাগুলো।

ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মৌলভীবাজার সফরে আসেন। তখন তিনি সকল উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দেন প্রতিটি ভবনের ছাদে বাগান করার জন্য। এ থেকেই পূর্বজুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ ছাদে বাগান করতে আগ্রহী হয়। 

স্থানীয় বাসিন্দা হুমায়ুন রশিদ রাজি বলেন, এই ছাদ কৃষি আসলেই এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ছাদ কৃষি দেখে সবাই এখন অনেক বাসা-বাড়িতে বাগান করছে। যার জন্য পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। 

কথা হয় পূর্ব জুড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালেহ উদ্দিন আহমদের সঙ্গে। তিনি বলেন, যাতে ছাদ শূন্য না থাকে, সেজন্য বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে জেলায় আমরা সর্বপ্রথম এই ছাদ কৃষি শুরু করি। ছাদ কৃষি শুরু করার পর বিভাগীয় কমিশনার এবং মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কয়েকবার পরিদর্শনে আসেন। 

তিনি বলেন, গত দুই বছর থেকে প্রতিবছরই গাছে ফল আসছে। একটা প্রত্যন্ত এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের ছাদে কৃষি করার কারণে স্থানীয় এবং অনেক জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা ঘুরতে আসেন। তখন ওই দর্শনার্থীরা এই ফলগুলো ভোগ করেন। ভবিষ্যতে ছাদ কৃষি আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এবার আমরা একতলা ভবনের ছাদে বাগান করেছি। আগামীতে আমরা দুইতলা ভবনের ছাদেও বাগান করব এবং নতুন নতুন ফল-ফসলের চারা গাছ আনব। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই ছাদ বাগান যখন আশপাশের মানুষরা দেখতে আসেন, তখন সত্যিই আমাদের অনেক ভালো লাগে। তখন কাজ করার আগ্রহ আরও বেড়ে যায়। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ জসিম উদ্দিন বলেন, যাদের বাড়িতে ছাদ রয়েছে তাদেরকে আমরা উৎসাহ দিচ্ছি ছাদ বাগান করতে। আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা এবং পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ছাদে বাগান করার ক্ষেত্রে আমরা প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। 

তিনি আরও বলেন, ছাদ বাগান থেকে প্রায় বারো মাসই ফল এবং সবজির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। কারণ খুব সহজেই ফলন হয়। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা ছাদ বাগানের পরামর্শ দিয়ে থাকি।


এসএইচ/আরআর-০৯