কমলগঞ্জে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চলছে প্রস্তুতি

কমলগঞ্জ প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২১
০৭:৫৩ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২১
০১:৩১ পূর্বাহ্ন



কমলগঞ্জে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চলছে প্রস্তুতি

করোনা সংক্রমণের কারণে টানা ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর সরকারি নির্দেশনায় আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলছে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ জন্য সারা দেশের মতো মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষা উপযোগী করতে ঝোপঝাড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শ্রেণিকক্ষ ধোয়া-মোছাসহ অগ্রিম প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর অনলাইনে পাঠদান শুরু হলেও সারা দেশে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী নানা কারণে অনলাইনে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। মাঝে কয়েক দফা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার উদ্যোগ নিলেও করোনার সংক্রমণ না কমায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয়নি। তবে গত কিছুদিন ধরে করোনার সংক্রমণ কমার কারণে অতিসম্প্রতি সরকারি সিদ্ধান্তে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিভাবে শ্রেণিভিত্তিক পাঠদান করতে হবে তারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাই আগামীকাল বুধবারের মধ্যেই শিক্ষার উপযোগী করতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উপজেলা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পক্ষ থেকে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কমলগঞ্জে মডেল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, কমলগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, ভান্ডারীগাঁও উচ্চবিদ্যালয়, হাজী উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, মাধবপুর উচ্চবিদ্যালয়, কালী প্রসাদ উচ্চবিদ্যালয়, শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয় ও দয়াময় সিংহ উচ্চবিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ।

সরকারি ঘোষণার পর থেকেই কমলগঞ্জের ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৫টি মাদরাসা, ৮টি জুনিয়র বিদ্যালয়, ৪টি কলেজ ও ৩০টি কেজি স্কুল খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আঙিনা ও শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীরের ভেতর ও বাইরের ঝোঁপঝাড়ও পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। অফিস কক্ষ, শিক্ষকদের কক্ষ, প্রাঙ্গণ সবখানে জীবানুনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ভান্ডারীগাঁও উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. খুরশেদ আলী বলেন, সরকারি ঘোষণার পর শিক্ষা বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে বিদ্যালয়কে জীবানুমুক্ত করে শিক্ষা উপযোগী করে রাখার জন্য সকল প্রস্তুতি নিতে। ইতোমধ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। এরই মধ্যে আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে মাস্ক, হ্যান্ড সেনিটাইজার, তাপমাত্রার মেশিন ও আইসোলেশনের জন্য ১টি আলাদা কক্ষ ঠিক করে রেখেছি। তাছাড়া আমরা বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের পাশাপাশি আরও দুটি ফটক প্রস্তুত রেখেছি, যাতে করে ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে গাদাগাদি না করে দূরত্ব বজায় রেখে ঢুকতে পারে।

সরকারি ঘোষণার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রস্তুতি রাখার সত্যতা নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম তালুকদার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামছুন নাহার পারভীন বলেন, ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শিক্ষা উপযোগী করে প্রস্তুত রাখতে বিদ্যালয় প্রধানদের সব ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারা ঠিকমতো সরকারি আইন মানছেন কি না তাও নজরদারিতে রাখা হয়েছে।

কমলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, সরকারি নির্দেশনামতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত কি না ও নির্দেশনামতো পরিচালিত হবে কি না সেদিকে উপজেলা প্রশাসন কঠোর নজরদারি করছে।


এসডি/আরআর-০৮