প্রথমবার সিলেটে খেলতে নামছে আবাহনী-মোহামেডান

রাফিদ চৌধুরী


ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
০২:৩৪ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
০২:৩৮ অপরাহ্ন



প্রথমবার সিলেটে খেলতে নামছে আবাহনী-মোহামেডান

‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমি আবাহনী-মোহামেডানের খেলা চাই।’ দুই দল মুখোমুখি হলেই খোদা বক্স মৃধার ধারা বর্ণনায় শোনা যেত কথাটি। খোদা বক্স মৃধা প্রয়াত হয়েছেন প্রায় এক যুগ হতে চললো। তার বিদায়ের সঙ্গে এই চিরচেনা ছন্দটাও হারিয়ে গেছে চিরতরে। সেই সঙ্গে হারিয়ে গেছে আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের উত্তেজনাও। একসময় দুই দলের খেলা মানেই ছিল কানায় কানায় দর্শকে পরিপূর্ণ। অথচ আজ এই দু দলের খেলায় থাকে দর্শক খরা। দলীয় শক্তিমত্তায় আবাহনী এখনও ধারাবাহিক হলেও মোহামেডান যেন অস্তমিত এক সূর্য।

সেই পূর্ণ শক্তির আবাহনীর বিপক্ষে খন্ডিত শক্তির মোহামেডান প্রথমবার খেলতে নামছে সিলেটে। সিলেট জেলা ফুটবল স্টেডিয়ামে আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। ম্যাচের আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে নিয়েছে দুই দল।

ফুটবলের সুসময়ে সিলেটের মাঠে কখনও আবাহনী-মোহামেডান মুখোমুখি হয়নি। যদিও উভয় দলই সিলেটের মাটিতে খেলে গেছে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের দল বিয়ানীবাজার স্পোর্টিং ক্লাবের হোম ভেন্যু থাকায় মোহামেডান-আবাহনী উভয় দলই সিলেট মাতিয়ে গেছে। সবশেষ শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হোম ভেন্যু ছিল সিলেট জেলা স্টেডিয়াম। তখনও আবাহনী-মোহামেডান সিলেট খেললেও দুই দলেরই প্রতিপক্ষ ছিল শেখ রাসেল। এবারই প্রথম সিলেটে খেলতে নামছে তারা। যদিও তাদের ম্যাচের আগের সেই দ্বৈরথ নেই।

তবে দ্বৈরথ নেই, কথাটা মানতে নারাজ ঢাকা আবাহনীর ম্যানেজার সত্যজিত দাশ রুপু। সিলেট মিররের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, মোহামেডানের সঙ্গে আবাহানীর খেলা মানেই টান টান উত্তেজনা থাকবে। দর্শকদের মাঝে উত্তেজনা ছড়াবে। মাঝে কিছুটা সময় মোহামেডান ফর্মহীনতায় ভুগেছে। তবে সম্প্রতি মোহামেডান দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তারা ভালো ফলও করছে। আমরাও চাই মোহামেডান শক্তিশালি হয়ে উঠুক। মোহামেডান উজ্জীবীত থাকলে দেশের ফুটবলও উজ্জীবীত হবে। তবে খেলাটা তো হবে মাঠে। সেখানে যে নিজের সেরাটা মেলে দিতে পারবে সেই জয়ী হবে।

মোহামেডান আর আবাহনী সিলেটের মাঠে ইতিহাস গড়তে চলেছে। তবে এই ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারছেন না দর্শকরা। অতিমারি করোনা পরিস্থিতির কারণে দর্শক প্রবেশের সুবিধা রাখা হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রুপু বলেন, দর্শকরাই ফুটবলের প্রাণ। আর সিলেটে খেলা মানে দর্শকে ঠাসা গ্যালারি। তারা পরিস্থিতির শিকার। তবে দর্শক প্রবেশের সুবিধা থাকলে অবশ্যই তাদের সমর্থন আমরা পেতাম।

এদিকে সিলেটের মাঠে প্রথম আবাহনীর মুখোমুখি হতে পেরে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব। সিলেট মিররের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, সিলেটে আমাদের রেকর্ড ভালো। এটা আবাহনীর হোমগ্রাউন্ড হলেও আমাদেরও কিছু দর্শক সিলেটে আছেন। সিলেটের দর্শকদের ভালোবাসায় আমরা মুগ্ধ হয়েছি। এবারও দর্শক প্রবেশের সুযোগ থাকলে আমরা সে ভালোবাসা পেতাম। অতিমারির কারণে বাধ্য হয়ে দর্শকশূন্য মাঠেই আমাদের খেলতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মোহামেডান দল হিসেবে আমাদের আগের অবস্থান নেই। কয়েক মৌসুম তো আমরা দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণেও ব্যর্থ হয়েছি। তবু নবীন ও প্রবীণ খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে আমরা চেষ্টা করছি মোহামেডানের সুদিন ফিরিয়ে আনার। কাল (আজ) আমাদের চেষ্টা থাকবে সমর্থকদের প্রত্যাশা মেটানোর মতো খেলা।

ফুটবলের দ্বৈরথে মোহামেডান অনেকটা পিছিয়ে গেলেও এবারের লিগের পয়েন্ট টেবিল অবশ্য ভিন্ন কথা বলে। গত কয়েক মৌসুমের তুলনায় টেবিলে ভালো অবস্থানে রয়েছে তারা। ৪ ম্যাচে ২ জয় ও ২ ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে অবস্থান করছে মোহামেডান। অন্যদিকে সমান-সংখ্যক ম্যাচ খেলে তিন জয় ও এ ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ঢাকা আবাহনী। 

আরসি-১৩