জোটসঙ্গীদের বিরোধী পক্ষে চান শেখ হাসিনা

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ১৫, ২০২২
০৯:২০ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ১৫, ২০২২
০৯:২০ অপরাহ্ন



জোটসঙ্গীদের বিরোধী পক্ষে চান শেখ হাসিনা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবে করার ঘোষণা দিলেও ভবিষ্যতে জোটসঙ্গীদের শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে চান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি মনে করেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সরকার ও বিরোধী পক্ষ উভয়ই হতে হবে প্রগতিশীল শক্তি। একইসঙ্গে তিনি শরিকদের জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে ১৪ দল একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে এবং বিজয়ী হলে সরকারে জোটসঙ্গীরাও থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। 

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।

বৈঠকে শরিকরা একযোগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আশু পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে স্ব স্ব দলের জন্য আসন দাবি করেন তারা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটটির শীর্ষ নেতারা এ বৈঠকে অংশ নেন। শুরুতেই আওয়ামী লীগ সভাপতি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং স্বল্প আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘবে বিশেষ কার্ড দেয়ার কথা তুলে ধরেন।

বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে শক্ত পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রধানকে অনুরোধ করেন। পাশাপাশি তিনি জানতে চান আগামী নির্বাচনে ১৪ দল জোটগতভাবে নির্বাচন করবে কিনা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, আগামী নির্বাচনে জোটগতভাবেই ১৪ দল অংশগ্রহণ করবে। আর সে নির্বাচনে বিজয়ী হলে ১৪ দল সরকারেও একসঙ্গে থাকবে।

জোটের আরেক শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি হাসানুল হক ইনু জোটগত ঐক্যের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বাস্তবতায় ১৪ দলীয় জোটের প্রয়োজন রয়েছে। আর সে কারণে কেন্দ্রের পাশাপাশি তৃণমূলেও ১৪ দলের পারস্পরিক সমঝোতার সম্পর্ক থাকতে হবে।’

আহমদিয়া সম্প্রদায়কে ‘অমুসলিম’ ঘোষণার জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তির দাবির প্রতি ইঙ্গিত করে ইনু বলেন, ‘এ বিষয়ে ১৪ দলের একটি অবস্থান থাকা উচিত।’

এ বিষয়ে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদৎ হোসেন বলেন, ‘১৪ দল অসাম্প্রদায়িক জোট। সবার স্বাধীন মতামত ও অধিকারে বিশ্বাস করে। তাই ১৪ দল এমন দাবিকে সমর্থন করতে পারে না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও একই মত ব্যক্ত করেন। ডা. শাহাদৎ তার বক্তব্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

প্রগতিশীল পক্ষে বিরোধী দল থাকা উচিত- প্রধামন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘তা না হলে অশুভ শক্তি সেই জায়গা দখল করবে।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য দায়ীদের মধ্যে শাসক দল আওয়ামী লীগের নেতা থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। তিনি আগামী নির্বাচনে তার দলের জন্য আসন দাবি করেন।

কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম শ্রমিকদের প্রণোদনা অনেক শ্রমিকের কাছে পৌঁছায়নি জানালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সব গার্মেন্টসকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। কেউ না পেয়ে থাকলে তালিকা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বৈঠকে জোট শরিক বাংলাদেশ জাসদ না আসার প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, ‘ওই দলের সাধারণ সম্পাদক এমপি ছিলেন। তাকে ওই আসন ছেড়ে দিলে এ ঘটনা না-ও ঘটতে পারত।’

শরিকদের আশ্বস্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যোগ্য এবং জয়ী হয়ে আসার সামর্থ্য আছে এমন শরিকদের আসন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি এস কে শিকদার প্রমুখ।

আরসি-০৬