নিউইয়র্কে মাহবুবুর রহমানের ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ২১, ২০২২
০২:০২ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২১, ২০২২
০২:০২ অপরাহ্ন



নিউইয়র্কে মাহবুবুর রহমানের ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব


নিউইয়র্কের প্রবীণ সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানের লেখা ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ গ্রন্থকে স্বদেশ ও প্রবাসের সময়ের দলিল ও জীবনের আখ্যান উল্লেখ করে আলোচকরা বলেছেন, মাহবুবুর রহমান অকৃত্রিম একজন সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিক। তিনি সাংবাদিক হিসাবে ইচ্ছা করলে জীবনে গাড়ি, বাড়ি ও অর্থ-সম্পদ সবই করতে পারতেন। কিন্তু নৈতিক অবস্থানে থেকে সাংবাদিকতার কারণে তিনি কখনো অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করেননি।

গত ১৬ মে সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের জুইশ সেন্টারে ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিউইয়র্কের প্রাচীনতম ও বহুল প্রচারিত সংবাদ মাধ্যম ঠিকানা, জনপ্রিয় পত্রিকা বাংলা পত্রিকা ও টাইম টিভি এবং সাপ্তাহিক প্রথম আলো।

ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য এম এম শাহীনের সভাপতিত্বে এবং সাপ্তাহিক প্রথম আলো সম্পাদক ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন ও রওশন হকের যৌথ সঞ্চালনায় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টিভির সিইও আবু তাহের।


অনুষ্ঠানে ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ বইয়ের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে কবি ও লেখক ফারুক ফয়সাল বলেন, মাহবুবুর রহমানের গ্রন্থে বাংলাদেশের কথা আছে। নিউইয়র্কের কথা আছে। সারা বিশ্বের প্রবাসীদের কথা আছে। তিনি ঢাকায় বসেও নিউইয়র্কের আকাশ দেখেন। আবার ঢাকায় বসে জানালা দিয়ে বস্তি দেখেন। বস্তিবাসীর দুঃখ-দুর্দশার কথা ভাবেন। তাদের মানবেতর জীবন নিয়ে ভাবেন। আর এ সবকিছু তিনি তাঁর লেখায় তুলে এনেছেন।

ফারুক ফয়সাল বলেন, মাহবুবুর রহমান তাঁর বইয়ে কখনো স্যাটায়ার করেছেন। হাস্য রসাত্মকভাবে অনেক কঠিন কথা তুলে ধরেছেন। কখনো নরম ভাষায় ব্যঙ্গ করেছেন। তিনি বলেন, মাহবুবুর রহমানের গ্রন্থে অনেক আর্তনাদও রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে ঠিকানা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এম শাহীন বলেন, নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটি বিনির্মাণে এখানকার সংবাদপত্রের ভূমিকা রয়েছে। আর এখানকার সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠায় মাহবুবুর রহমানের অসামান্য অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, দৈনিক ইত্তেফাক সংবাদপত্রের জন্য ইনস্টিটিউট। আর প্রবাসে একইভাবে ঠিকানা এই কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে ভূমিকা রেখেছে। আর এর নেপথ্য কারিগর ঠিকানার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম বার্তা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। তিনি ঠিকানার পথচলায় মাহবুবুর রহমানের অবদানের কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন।

প্রবীণ সাংবাদিক ও সাপ্তাহিক আজকালের প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমেদ সাংবাদিক ও লেখক মাহবুবুর রহমানের ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি গ্রন্থকে রম্য রচনার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, তিনি রম্য রচনার মাধ্যমে ব্যক্তিগত, সমাজ জীবনকে তুলে ধরেছেন। এটি এ সময়ের দলিল বলে উল্লেখ করেন মনজুর আহমেদ।

ঠিকানার প্রধান সম্পাদক মুহম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, সাংবাদিকরা পেশার প্রতি মনযোগী। সৃজনশীল কাজে তাদের মনযোগ কম। তবে অনেকেই আছেন যারা গল্প, কবিতা ও উপন্যাস লেখেন। মাহবুবুর ররহমান সাংবাদিকতা জীবনের বাইরে নতুন সাফল্য দেখালেন। তার বই ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ ব্যক্তিগত এবং দেশ ও প্রবাস জীবনের দলিল হয়ে থাকবে।

সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান বলেন. ‘ফ্রিডম ইজ নট ফ্রি’ গ্রন্থে আমি সাহিত্যের মান খুঁজতে যাইনি। তবে সাহিত্যের ছোঁয়া আছে। এজন্য হয়তো অনেকের কাছে আমার লেখা ভালো লেগেছে। তবে আমি রাজনীতির বিষয় পছন্দ করি না। এজন্য আমার লেখায় রাজনীতি টেনে আনিনি। তিনি বলেন, আজ আপনারা আমাকে যে উৎসাহ দিলেন, এই উৎসাহ ভবিষ্যতে আমাকে আরো বই লিখতে উৎসাহ জোগাবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক সাঈদুজ্জামান চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধূরী, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মুকিত চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক মাহমুদ খান তাসের, ঠিকানার বার্তা সম্পাদক ও দৈনিক ইত্তেফাকের যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, সাপ্তাহিক প্রবাস সম্পাদক মুহাম্মদ সাঈদ, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আব্দুল বাসিত, বর্তমান সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল, লেখক ডা. এস এম মোজাম্মেল হক, লেখক সুফেরমামা, সৈয়দ ফজলুর রহমান, রাজনীতিবিদ শাহীন আজমল, লেখক ও সাংবাদিক শামসাদ হুসাম, মুনীয়া মাহমুদ, লেখক-সাংবাদিক ও গীতিকার ইশতিয়াক রূপু, সাংবাদিক সাখাওয়াত সেলিম, বাংলাদেশের একসময়ের জনপ্রিয় মডেল মিসবাহ কামাল চৌধুরী মিশু, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, আল-আমিন মসজিদের প্রেসিডেন্ট জয়নাল আবেদীন, সাংবাদিক ও চলচ্চিত্রকার রওশন আরা নীপা, সাংবাদিক মনিজা রহমান, সাপ্তাহিক প্রথম আলোর সাংবাদিক শেলী জামান প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম ও সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহমুদ খান তাসের, চলচ্চিত্রকার শামীম আরা নীপা, সাংবাদিক ও লেখক মনিজা রহমান, এইচ বি. রীতা, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সভাপতি ময়নুল হক চৌধুরী হেলাল ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ ফুল ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী দিয়ে মাহবুবুর রহমানকে অভিনন্দন জানান। সাপ্তাহিক প্রথম আলোর এইচ বি রীতা, কবি রওশন হাসান এবং আনোয়ার লাভলু অনুষ্ঠানে কবিতা পড়ে শোনান।

অনুষ্ঠানে মাহবুবুর রহমানকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন রওশন হাসান। এসময় মাহবুবুর রহমানের সহধর্মিনী সৈয়দা নূরুন নাহার হাসি এবং একমাত্র কন্যা শাহরীন সুলতানা লোপা উপস্থিত ছিলেন।

এএন/০৬