শ্রীমঙ্গলে ১৬৭ মন্ডপে দূর্গোৎসব

গোলাম কিবরিয়া, শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
১১:৪৭ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
১১:৪৭ অপরাহ্ন



শ্রীমঙ্গলে ১৬৭ মন্ডপে দূর্গোৎসব

দুয়ারে কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।  উৎসবকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন ও পূজা উদযাপন পরিষদ। এবার শ্রীমঙ্গলে সার্বজনীন ও ব্যক্তিগত মিলিয়ে ১৬৭টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা।এখন চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ  মুহূর্তের কাজ। মাটির কাজ শেষে শিল্পীর রংতুলির আঁচড়ে  এবং রংবেরঙের পোশাকে মূর্ত হয়ে উঠছে দেবীর রূপ।

আগামীকাল শনিবার  (১ অক্টোবর ) ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গাপূজা। পুরোহিতরা বলছে দেবী দুর্গা এবার আগমন করবে গজে চড়ে আর গমনে যাবে নৌকায় চড়ে।

সকল সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দেবী দুর্গা শক্তি ও সুন্দরের প্রতীক। প্রতিবছর অশুভ চরিত্রের অসুরের বিনাশ করতে মা দেবী দুর্গা এই ধরাধামে আবির্ভূত হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, সমাজ থেকে হিংসা, নিন্দা, অন্যায়-অবিচার ও গ্লানি দূর করার জন্যই এই পূজার আয়োজন।

এসব উদ্দেশ্য সামনে রেখে সারা দেশের ন্যায়  শ্রীমঙ্গলেও আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দুর্গাপূজা। এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন মৃৎশিল্পীরা। উপজেলার সকল হিন্দুধর্মাবলম্বীরা দেবী দুর্গাকে বরণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঘরে ঘরে কেনাকাটার ধুম আর আনন্দ উৎসব ও পূজার প্রস্তুতি। 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পূজা শুরু করতে  প্রস্তুত সকল মণ্ডপ। দশমীপূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ৫ অক্টোবর হিন্দু ধর্মালম্বীদের এই মহা উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।

আজ শুক্রবার  (৩০ সেপ্টেম্বর) উপজেলার কালীঘাট, ফুলছড়া, জেরিন, রাজঘাট, সবুজবাগ, শাপলা বাগ, রাধানগর, কালাপুর, সাতগাঁও, মাজদিহিসহ বিভিন্ন দুর্গামন্দির ঘুরে দেখা গেছে, শারদীয় দুর্গাপূজার প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্যমতে, এবার শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১৬৭টি মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ১৫৫টি সার্বজনীন পূজা মন্ডপ এবং ১২ টি ব্যক্তিগত মণ্ডপে এই পূজা অনুষ্ঠিত হবে। শুধু পৌরসভা এলাকাতেই ১৭টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা।

আইনশৃঙ্খলা সহ পূজার সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. হরিপদ রায় বলেন, দুর্গোৎসব সামনে রেখে জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, উপজেলা প্রশাসন, ও সম্প্রীতি কমিটির সকলের সাথে বৈঠক করেছি। তারা সবাই আমাদের আশ্বস্ত করেছেন পূর্বের ধারা অব্যাহত রেখে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হবে প্রতিটি পূজা মন্ডপে। তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলের মানুষ অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়। এখানে আমরা যার যার ধর্ম নির্দ্বিধায় পালন করে আসছি। এখন পর্যন্ত কোন পূজা মন্ডপকে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। সকলের মাঝে সুন্দর সম্প্রীতি বজায় আছে। আমরা আশা করছি কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা ছাড়া সকল ধর্মের মানুষের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন করতে পারব। তিনি আরও বলেন, আমার বিশ্বাস এবারের পূজার মধ্য দিয়ে শ্রীমঙ্গলের সম্প্রীতি সারাদেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম অর রশিদ তালুকদার বলেন, হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ দৃষ্টি রাখছে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা সম্পন্ন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও সহকারী উপপরিদর্শকদের (এএসআই) বিভিন্ন মণ্ডপের দায়িত্ব দিয়ে নিয়মিত টহল দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আনসার মোতায়েনের পাশাপাশি  সব কটি পূজামণ্ডপ গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকবে। তাছাড়া আমি সহ আমার থানার দুই পরিদর্শক তদন্ত ও অপারেশন আমরা সার্বক্ষণিক পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা মনিটরিং-এ থাকবো। তিনি বলেন,আশা করছি কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না এবারের পূজায়। তবে এ জন্য তিনি সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।


জিকে-০১/এএফ-০২