লাখ টাকা দিয়ে ভোট কেনার প্রতিযোগিতা!

কুলাউড়া প্রতিনিধি


অক্টোবর ১৬, ২০২২
১২:২৭ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ১৭, ২০২২
১২:৫৩ পূর্বাহ্ন



লাখ টাকা দিয়ে ভোট কেনার প্রতিযোগিতা!
জেলা পরিষদ নির্বাচন

জেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় বাড়ছে প্রার্থীদের দৌড়ঝাপ, প্রচার। নিজের জয় নিশ্চিতে প্রার্থীরা নানামুখি তৎপরতা চালাচ্ছেন।

পরিষদের ৩নং ওয়ার্ড কুলাউড়ায় সদস্য প্রার্থীদের একাধিকজনের বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনার অভিযোগ উঠেছে। ধর্মগ্রন্থ ছুঁইয়ে লাখ টাকার বিনিময়ে ভোট কেনার চেষ্টা চলছে। ক্ষমতার দাপটও দেখাচ্ছেন কেউ কেউ। এমন সব অভিযোগ মিলেছে।

জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের ৩নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তৃতি কুলাউড়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে। এখানে ভোট সংখ্যা ১৮৫টি। 

মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মিসবাউর রহমান ছাড়া আর কেউ প্রার্থী না হওয়ায় এ পদে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি। তবে ওয়ার্ডে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন ৫জন। 

বর্তমান জেলা পরিষদের সদস্য সেলিম আহমদ ও মাহবুবুর রহমান মান্না ছাড়া বাকি প্রার্থীরা হলেন কুলাউড়া পৌরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল আহমদ শামীম, ভাটেরা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম সিদ্দিকী নানু ও দৈনিক সমকালের কুলাউড়া প্রতিনিধি সাংবাদিক সৈয়দ আশফাক তানভীর।

ফলে সদস্যপদের প্রার্থীদের ঘিরেই নির্বাচনের মূল প্রচার। ভোটারদের কদরও এখন তুঙ্গে। ভোট নিশ্চিতে চলছে দর কষাকষি। নং ওয়ার্ডে একেকটি ভোটের দাম লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে বলে চাউর হয়েছে।

এদিকে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলা নিয়ে সংরক্ষিত আসন-০১। এ আসনে লড়ছেন ৩ নারী প্রার্থী। তারা হলেন বর্তমান সদস্য শিরীন আক্তার মুন্নি ও জোবেদা ইকবাল। তাদের সঙ্গে প্রার্থী হয়েছেন রেহানা পারভীন। তিন উপজেলা মিলিয়ে এখানে ভোট সংখ্যা ৪১২। তিন প্রার্থীই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও আলোচনায় আছেন বর্তমান ২ সদস্য প্রার্থীই।

বিজয় নিশ্চিতে ভোট কেনার প্রতিযোগিতা চলছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভোটার জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ‘ভোট কিনতে কোরআন শরীফ ছুঁইয়ে লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। এছাড়া টাকার সঙ্গে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টাও চলছে ‘

এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন বলেন, ‘টাকা দিয়ে ভোট কেনার কান কথা শুনে লাভ নেই। কোন প্রার্থী এখন পর্যন্ত এ নিয়ে অভিযোগ করেননি।’ নির্বাচনে ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সামান্য ভোট। ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিযুক্ত থাকবে। কোন গুজবে কান দিয়ে লাভ নেই। পুরো জেলায় ভোট ইভিএমে হবে।’

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘জেলার ৭টি কেন্দ্রে ২টি করে কক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেই দুটি কক্ষে সিসি ক্যামেরা ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে। আমার অফিস থেকে তা মনিটরিং করা হবে। তাছাড়া একটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। সুতরাং এখানে সামান্যতম কিছুরও সুযোগ থাকছে না।’

প্রসঙ্গত সারাদেশের সঙ্গে আগামী সোমবার মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কুলাউড়া নবীন চন্দ্র সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, বড়লেখা নারী শিক্ষা একাডেমী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কাঠালতলী ও জুড়ী উপজেলার দক্ষিণ জাঙ্গিরাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আরএম-০৩