শ্রীমঙ্গলে বেড়েছে পণ্যের দাম, সংকটে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

কাজী গোলাম কিবরিয়া, শ্রীমঙ্গল


এপ্রিল ১২, ২০২০
১০:৫২ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১২, ২০২০
১০:৫২ অপরাহ্ন



শ্রীমঙ্গলে বেড়েছে পণ্যের দাম, সংকটে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা

মৌলভীবাজরের শ্রীমঙ্গলে হঠাৎ করেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ মূল্য বৃদ্ধি করছে। এতে করে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজনের মধ্যে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। লোকজন প্রয়োজনীয় সামগ্রী দ্বিগুণ দামে ক্রয় করে বাড়িতে মজুদ করছেন। এতে করে আরও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত দুইদিন যাবৎ উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে চলছে এমন কারসাজি।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, করোনাভাইরাস দেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে- এমন প্রচার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় সকল শ্রেণির লোকজন প্রয়োজনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পরিমাণ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী কিনতে শুরু করেছেন। আর এই সুযোগে শ্রীমঙ্গলের প্রতিটি হাট-বাজারে বাড়ানো হচ্ছে পণ্যের দাম। গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে চালের মূল্য বস্তাপ্রতি ২শ থেকে ৪শ টাকা, পেঁয়াজের মূল্য ২০ থেকে ৩০ টাকা, রসুন ২০ থেকে ৫০ টাকা, আলু ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া ডাল, চিনি, লবণ, তেল, ময়দা, হলুদ, মরিচ, মশলাসহ শুকনো খাবার থেকে শুরু করে সকল ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বেড়ে গেছে শিশু খাদ্য আর গবাদি পশুর খাবারের দামও। কাঁচা বাজারেও একই কাণ্ড। অপরদিকে মাছ, মাংস আর ওষুধের দামও সংকট দেখিয়ে বাড়ানো হয়েছে। উপজেলার বেশিরভাগ ওষুধের দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক আর জীবানুনাশক হেক্সিসল। দুই-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি। এ কারণে গতকাল শনিবারও বাজারে কেনাকাটা করতে এসে হিমশিম খেয়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। আতঙ্কের কারণে বাড়তি দামেই জিনিসপত্র কিনে বাড়িতে এনে মজুদ করছেন সাধারণ মানুষ। এ কারণে দাম আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আজ রবিবার (১২ এপ্রিল) শ্রীমঙ্গল নতুন বাজারে কেনাকাটা করতে আসা আনোয়ার মিয়া বলেন, আমরা দিন আনি দিন খাই। যে টাকা উপার্জন করি সেটা দিয়ে কোনোরকমে পরিবার-পরিজন দিয়ে দিনযাপন করি। কিন্তু আজ বাজারে এসে দেখি হঠাৎ করে চাল থেকে শুরু করে সবধরণের নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে। পেঁয়াজ গতকাল শনিবার ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকায়, রসুন আগে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আজ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। গতকাল প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১০৫ টাকায়, আজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আর আদার দাম ১১০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের লোকজন করোনাভাইরাসে মৃত্যুর আগে না খেয়েই মারা যাবে।

সেন্ট্রাল রোডের চাল ব্যবসায়ী দেলোয়ার মিয়া বলেন, গতকাল থেকে গাড়ি ভাড়া বেড়ে গেছে। এমনকি আমরা নাটোর থেকে যে চাল ক্রয় করে নিয়ে আসি, সেখানে চালের দাম বস্তাপ্রতি এক থেকে দেড়শ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমাদের আগের তুলনায় একটু বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে।

পাইকারি মুদি ব্যবসায়ী রাজু মিয়া বলেন, পাইকারি দরে পেঁয়াজ ও রসুন ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। তাই আমাদের বেশি দামে এসব পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে হচ্ছে।