রাজনগরে বন্ধ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কার্যক্রম

সৈয়দ ফুয়াদ হোসেন, রাজনগর


এপ্রিল ১৩, ২০২০
১২:৪১ পূর্বাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৩, ২০২০
১২:৪১ পূর্বাহ্ন



রাজনগরে বন্ধ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কার্যক্রম
সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে ছুটিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী

মৌলভীবাজারের রাজনগরে গত একমাস ধরে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কোনো কারণ ছাড়াই এ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে দিব্যি ছুটি কাটাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলরা বার বার নির্দেশনা দিচ্ছেন করোনাভাইরাসের দোহাই দিয়ে কোনো ধরণের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করা যাবে না। অথচ রাজনগরে এই বিভাগের ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রগুলোসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে জরুরি সেবা নিতে এসে মানুষ ফেরত যাচ্ছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের আগ্রাসন বিশ্বব্যাপী আগে থেকে শুরু হলেও রাজনগরে বিগত ১৭ মার্চ থেকে মূলত সচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ প্রতিরোধমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় মৌলভীবাজার জেলার সম্ভাব্য করোনা রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য রাজনগর হাসপাতালকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে আইসোলেন সেন্টার না করে জেলার সম্ভাব্য করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজনগর হাসপাতালকে আইসোলেসন সেন্টার করায় ওই সময় রাজনগরের সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদ জানান এবং মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন। এ সুযোগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এর অধীনস্থ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের সেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কোনো কারণ ছাড়া এ বিভাগের সেবা কার্যক্রম বন্ধ করায় সেবা গ্রহিতারা সেবা নিতে এসে হতাশ হয়ে ফেরত যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলরা প্রতিদিন বার বার কঠোর নির্দেশনা দিচ্ছেন যে করোনাভাইরাসের দোহাই দিয়ে কোনো চিকিৎসাসেবা বন্ধ করা যাবে না। অথচ রাজনগরের ৮টি ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সরকারের উর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে সেবা বন্ধ করে দিব্যি ছুটি কাটাচ্ছেন। সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সব জায়গায় পিপিইসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছে বলে ঘোষণা দিলেও রাজনগর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ তা পাওয়ার কথা অস্বীকার করছে। এছাড়া এই দুর্যোগের মুহূর্তে উপজেলা প্রশাসন ও সকল বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার কথা থাকলেও তারা তা করছেন না। 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মনসুরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিলন বখত বলেন, এই মুহূর্তে সরকারের কোনো সেবা বন্ধ করার সুযোগ নেই। রাজনগরে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।

এ ব্যাপারে জানতে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রাশেদুল ইসলামকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে একই বিভাগের ক্লিনিক্যাল সাইটের দায়িত্বে নিয়োজিত ডা. রাজিব দেবনাথ জানান, জনবল সংকট ও করোনা পরিস্থিতিতে পিপিইসহ সুরক্ষা সরঞ্জাম না থাকায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবাসহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সেবা কার্যক্রম সীমিতভাবে চলছে।

সেবা বন্ধ থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, নিজ ডিপার্টমেন্ট ছাড়া অন্য কোনো বিভাগ বা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রয়োজন বোধ করি না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ঊর্মি রায় বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কেউ আমার সঙ্গে কোনোদিন যোগাযোগ করেনি। তবে করোনার দোহাই দিয়ে তাদের কার্যক্রম বন্ধের কোনো সুযোগ নেই। আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।