বড়লেখায় অগ্নিকাণ্ড, ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

বড়লেখা প্রতিনিধি


এপ্রিল ১৫, ২০২০
১০:১৮ অপরাহ্ন


আপডেট : এপ্রিল ১৫, ২০২০
১০:১৮ অপরাহ্ন



বড়লেখায় অগ্নিকাণ্ড, ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একটি কলোনিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে কলোনির একটি দোকানসহ ১০টি ঘর পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে পৌরসভার মহুবন্দ এলাকার ইসলাম উদ্দিনের কলোনিতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগেই আগুনে দোকানের বিভিন্ন মালামাল এবং ১০টি ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন। ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক আব্দুল হাছিবের দাবি, শত্রুতার জের ধরে কেউ এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

খবর পেয়ে পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাহেন পারভেজ রিপন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার মহুবন্দ এলাকার ইসলাম উদ্দিনের কলোনিতে একটি মুদি দোকানসহ ১০টি সেমিপাকা ঘর রয়েছে। কলোনিতে মুদি দোকানি আব্দুল হাছিবসহ ৪টি পরিবার বসবাস করে। মঙ্গলবার ভোরের কিছুক্ষণ আগে কলোনির বাসিন্দা আব্দুল হাছিবের দোকানে হঠাৎ আগুন লাগে। আব্দুল হাছিব আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়েন এবং কলোনির অন্য বাসিন্দাদের ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। পরে স্থানীয় একটি মসজিদে কলোনিতে আগুন লাগার বিষয়টি মাইকিং করে জানানো হয়। কিন্তু মুহূর্তেই আগুন দোকানের পেছনে থাকা ঘরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। 

স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি ফায়ার সার্ভিসকে জানান এবং নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। কিন্তু এর আগেই দোকানসহ কলোনির ১০টি সেমিপাকা ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে দোকানের বিভিন্ন মালামাল এবং ১০টি ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র পুড়ে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজন।

কলোনির বাসিন্দা দোকান মালিক আব্দুল হাছিব আজ বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে বলেন, কলোনির সামনেই আমার দোকান। এর পেছনের একটি কক্ষে আমি থাকি। ভোররাতে হঠাৎ দোকানে আগুন লাগে। বিষয়টি টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ি। দোকানের বারান্দায় এসে দেখি একটি কার্টনে আগুন জ্বলছে। দ্রুত কলোনির বাসিন্দাদের ঘুম থেকে ডেকে তুলি। পরে কাউকে না পেয়ে স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামকে মাইকে আগুন লাগার বিষয়টি স্থানীয়দের জানাতে বলি। মাইকে খবর পেয়ে মানুষজন আসেন। ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়। কিন্তু ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই আমার দোকানঘরসহ কলোনির কয়েকটি ঘর পুড়ে যায়। আমার দোকানে থাকা দু'টি ফ্রিজসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে প্রায় ১০ লাখ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে কেউ আমার দোকানে আগুন দিয়েছে। তা না হলে এখানে আগুন লাগার কথা নয়।

কলোনির বাসিন্দা ফয়ছল মিয়া বলেন, আমি ট্রাক্টর শ্রমিক। পরিবার নিয়ে কলোনিতে থাকি। গতকাল অন্য জায়গায় ছিলাম। সকালে খবর পেয়ে এসেছি। আগুনে আমাদের সব পুড়ে গেল। এখন কোথায় থাকব, কিভাবে খাব? 

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাহেন পারভেজ রিপন বলেন, পৌরসভার মেয়রসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কিভাবে আগুন লেগেছে তা জানা যায়নি। তবে দোকান মালিক আব্দুল হাছিব আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন, শত্রুতার জের ধরে কেউ তার দোকানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত চারটি পরিবারকে পৌরসভার পক্ষ ৪০ কেজি চাল ও ৮ হাজার টাকা দিয়েছি।

বড়লেখা ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা অনুপ কুমার সিংহ বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি। তবে কিভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা চেয়েছি। তালিকা পেলেই তাদের সহায়তা করব।

 

এজে/আরআর