কিট অন্য দেশ নিয়ে যাবে, বাংলাদেশ পাবে না: ডা. জাফরুল্লাহ

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ২১, ২০২০
০২:১০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ২১, ২০২০
০২:১০ পূর্বাহ্ন



কিট অন্য দেশ নিয়ে যাবে, বাংলাদেশ পাবে না: ডা. জাফরুল্লাহ

আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় ঝুলে থাকা গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল উদ্ভাবিত করোনা কিট শেষ পর্যন্ত অন্য দেশে চলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

বুধবার (২০ মে) এক সেমিনারে তিনি বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা হবে কী, বিজনের সৃজনটা অন্য দেশ নিয়ে যাবে, বাংলাদেশ পাবে না।’

ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের গেরিলা কমান্ডার মেজর এ টি এম হায়দার বীর উত্তম মিলনায়তনে এ সেমিনার আয়োজন করা হয়।

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস বাংলাদেশের আসার আগেই গত ফেব্রুয়ারি মাসে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ শনাক্ত করণে ‘দ্রুত পদ্ধতি’ আবিষ্কার করেছে তারা। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র-আরএনএ বায়োটেক লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে এই কিট উদ্ভাবন করেছেন একদল বিজ্ঞানী। টিমের অন্য গবেষকরা হলেন ড. ফিরোজ আহমেদ, ড. নিহাদ আদনান, ড. মো. রাইদ জমিরুদ্দিন ও ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার।

এরপর থেকেই  কিটের জন্য রিএজেন্ট আমদানি, আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ, কিটের সিআরও, এক্সটার্নাল ভ্যালিডেশন, সর্বোপরি চূড়ান্ত রেজিস্ট্রেশনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন গণস্বাস্থ্যের বিজ্ঞানীরা। সবশেষ এক্সটার্নাল ভ্যালিডেশন পর্যায়ে পৌঁছাতে পেরেছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে বুধবার কিট নিয়ে সেমিনার আয়োজন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। সেখানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ড. বিজন কুমার শীলসহ অন্য বিজ্ঞানীরা বক্তব্য দেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা বিজনকে (ড. বিজন কুমার শীল) একটু গুরুত্ব দিন, তাকে একবার সুযোগ দিন। তিনি যে আবিষ্কারটি করেছেন, এটা দেশ ও জাতির জন্য ব্যবহার করার সুযোগ দিন। এটা ব্যবহার করলে করোনাভাইরাস মোকাবিলার দ্বার উন্মুক্ত হবে। পাশাপাশি, অদূর ভবিষ্যতে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ায় নিয়েও বিজন কাজ করতে পারবে। তা না হলে যেটা হবে, বিজনের সৃজনটা অন্য দেশ নিয়ে যাবে, বাংলাদেশ পাবে না।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই ট্রাস্টি বলেন, ‘সারাদেশে ৪২টি পিসিআর ল্যাবে প্রতিদিন ১০ হাজার করে রোগীর করোনা টেস্ট হচ্ছে। আমাদের এই দ্রুত টেস্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রতিদিন ৫০ হাজার লোকের করোনা টেস্ট করা সম্ভব। আমরা সেভাবেই কিট বানিয়েছি। কিটের ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যে এখন থুতুকে নমুনা হিসেবে ব্যবহার করেও করোনা শনাক্ত করা যাবে।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমি পিসিআর পদ্ধতিকে ছোট বা বড় করছি না। শুধু বলছি, পিসিআর যেটা করতে পারে, আমাদের কিট সেটা করতে পারে কি না, সেটা যাচাই করে দেখুন। তারপর আপনারা সিদ্ধান্ত দিন। পিসিআরের পরীক্ষার সঙ্গে যদি আমাদের কিটের পরীক্ষা ম্যাচিং হয়, তাহলে দ্রুত বলে দিন আমাদের কিট ঠিক আছে। আমরা ব্যবহার করতে শুরু করি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যাচাই করে দেখেছি, পিসিআর টেস্ট যা বলেছে, সো ফার আমাদের কিটের টেস্টও তাই বলেছে। সুতরাং আর কালক্ষেপণ না করে কিট ব্যবহারের অনুমোদনটা দিন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের ৫০ কোটি টাকা ধার দিন। এই প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার জন্য কোনো একটা ব্যাংকে বলে দিন, তারা যেন আমাদের ৫০ কোটি টাকা দেয়। কোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতার ধার না যে না ধরতে হয়, সেভাবে আমাদের ৫০ কোটি টাকা দিন, যেন আমরা প্রতি মাসে এক কোটি কিট তৈরি করতে পারি।’

বিএ-১৪