না ফেরার দেশে জালাল আহমেদ চৌধুরী

খেলা ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
০৪:২৪ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২১, ২০২১
০৪:২৭ অপরাহ্ন



না ফেরার দেশে জালাল আহমেদ চৌধুরী

জালাল আহমদ চৌধুরী

শারীরিক অবস্থা আর চিকিৎসকদের কথায় আভাস আগে থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। অবশেষে শঙ্কাই সত্যে পরিণত হলো। চলেই গেলেন জালাল আহমেদ চৌধুরী। শব্দের মোহনীয়তায় যিনি মুগ্ধ করতেন সবাইকে, আজ থেকে তিনি আর লিখবেন না কিছু। জাগতিক সবকিছু থেকেই যে অনেক দূরত্বে এখন তিনি। ক্রিকেটার, আম্পায়ার, কোচ, লেখক, ক্রীড়া সাংবাদিক। কত পরিচয় তার। ক্রিকেটের ধ্রুপদী এক লেখক ছিলেন তিনি। যা লিখতেন তাই যেন অমৃত। সব ছাপিয়ে এখন তিনি আর দুনিয়ার কেউ নন। পরপারের বাসিন্দা হয়ে গেছেন। 

বাংলাদেশের ক্রিকেটের গুণী এই কোচের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল। অসুস্থ হয়ে ক্রীড়াঙ্গনের সর্বজন শ্রদ্ধেয় জালাল আহমেদ চৌধুরী ধানমন্ডির আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গত ১৫ সেপ্টেম্বর। পরে তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। 

গত শুক্রবার রাত থেকে ছিলেন ভেন্টিলেশনে। ছিলেন আইসিইউতেও। ফুসফুসের সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগে শেষ পর্যন্ত চলেই গেলেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই ব্যক্তিত্ব। মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে মারা গেছেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)।

আজ বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে জালাল চৌধুরীর জানাজা। বাদ আছর আজিমপুর আরেকটি জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।

ফুসফুসজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন ৭০ ঊর্ধ্ব জালাল চৌধুরী। করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ছিলেন। তিনি ভেন্টিলেশনে গেলেও আশায় ছিলেন সবাই। কিন্তু ফেরানো গেলো না তাকে। চলেই গেলেন চিরতরে। আজ বাদ আসর আজিমপুর ইরাকি কবরস্থান সংলগ্ন মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৪৭ সালে যখন সিলেট থেকে করিমগঞ্জ, শিলচর এসব এলাকা আলাদা হয়ে যায় সেই উত্তাল সময়েই করিমগঞ্জে জন্ম জালাল চৌধুরীর। পরিবারের সঙ্গে পরে এপারে। শেষ বয়সে রাজধানীর আজিমপুরে একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন একাই। তার সন্তানরা প্রবাসী। 

জালাল আহমেদ চৌধুরী সত্তর-আশির দশকে ক্রিকেট খেলেছেন। এরপর ক্রিকেট কোচিং করান। তার হাত ধরে দেশের অনেক শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটার তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেট দলের অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুও জালাল আহমেদ চৌধুরীর ক্রিকেটের ছাত্র ছিলেন। হাল আমলের মোহাম্মদ আশরাফুল-তুষার ইমরানরা তারই শিষ্য। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি বিজয়ী দলটিও জালাল চৌধুরীর হাতেই গড়া।

ক্রিকেট খেলা ও কোচিংই নয়, ক্রীড়া সাংবাদিকতাও করেছেন জালাল চৌধুরী। দেশের পেশাদার ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন তিনি। বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় তার লেখার দক্ষতা ছিল অসাধারণ। 

সর্বজন শ্রদ্ধেয় এই মানুষটি সবাইকে শোকে ভাসিয়ে চলে গেলেন। রেখে গেলেন তার অনবদ্য সব শব্দমালা আর ভক্ত অনুরাগী।


এএফ/০১