নিজস্ব প্রতিবেদক
আগস্ট ৩১, ২০২৪
০৯:১৬ অপরাহ্ন
আপডেট : সেপ্টেম্বর ০১, ২০২৪
০৯:০৩ অপরাহ্ন
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে আগামীতে কারা সরকার গঠন করবে।’ তিনি দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক খাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘স্বৈরাচারের দোসররা অদৃশ্য শক্তিরূপে জনতার বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে- দৃশ্যমান প্রতিপক্ষের চাইতে অদৃশ্য শত্রুরা অনেক বেশি ভয়ঙ্কর।’
আজ শনিবার (৩১ আগস্ট) সিলেট নগরের সুবিদবাজারে একটি কনভেনশন সেন্টারে সিলেট বিভাগে দলীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই প্রথম সিলেট বিভাগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করলেন তারেক রহমান। বিকাল সোয়া ৫টায় বক্তব্য শুরু করেন। প্রায় ৪০ মিনিট ধরে বক্তব্য দেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘যে সকল সহকর্মী হত্যার শিকার হয়েছেন, তাদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানী করতে পারবেন না, আমি কাউকে ছাড়ব না। সময় সুযোগ মতো ব্যবস্থা নেব। আমি আপনাদের মাধ্যমে সবার কাছে একটি ম্যাসেজ পৌঁছে দিতে চাই, কেউ যদি দলকে ব্যবহার করে স্বার্থ হাসিল করতে চায়। তাহলে আমি সুযোগ পেলে সবাইকে খোঁজে খোঁজে আইনের হাতে তুলে দেব।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা বিগত বছরগুলোতে সংকটময় পরিস্থিতি থেকে উঠে এসেছেন, তাই আপনারা সবাই পরিক্ষিত নেতা। যেহেতু স্বৈরাচারের পতন হয়েছে, অনেকেই মনে করছেন আমরা ক্ষমতায় চলে এসেছি। আমি পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, আমরা অতিতেও বিরোধী দলে ছিলাম, এখনো আমরা বিরোধী দলে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা বিরোধী দলে আছি। তাই আমাদেরকে প্রত্যেকটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপনারা যে পর্যায়ের নেতাই হোন না কেন, নিজেকে ছোট মনে করবেন না। কারন আপনি শহীদ জিয়া ও বিএনপির সৈনিক। আপনার দায়িত্ব অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। স্বৈরাচারের পতন হলেও আজকে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে তার দাঁতভাঙা জবাব তৃণমূলের নেতাকর্মীরাই দিতে সক্ষম। দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে। কারণ মানুষ জানে বিএনপি যতবার দেশ পরিচালনার সুযোগ পেয়েছে, দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছে।’
বিএনপির এ শীর্ষ নেতা বলেন, যেকোন মূল্যে আপনাকে আপনার এলাকার মানুষের আস্থা ধরে রাখতে হবে, মানুষের প্রত্যাশা মতো চলতে হবে। না হলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন। মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাসের মূল্যায়ন করতে হবে। মানুষের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আসছে। সাধারণ মানুষের চিন্তা চেতনার সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখে আমাদের চিন্তা চেতনারও পরিবর্তন করতে হবে। তাই আসুন আমরা প্রত্যেকে নিজেদেরকে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী গড়ে তোলতে হবে।’
তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, তৃণমূল সতর্ক নজরদারি রাখলে কোনো ষড়যন্ত্রকারীই দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। একই সঙ্গে তিনি দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী সব অদৃশ্য ও দৃশ্যমান শক্তিকে প্রতিহত করতে তৃণমূলকে সজাগ, ঐক্যবদ্ধ এবং সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেন।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদী লুনা, ড. এনামুল হক চৌধুরী ও আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকী, কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী ও আবুল কাহের চৌধুরী শামিম, জাসাস'র আহবায়ক হেলাল খান, সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, বিএনপির সিনিয়র নেতা সালেহ আহমদ খসরু, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও জেলা বিএনপি নেতা ফয়সল আহমদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট বিভাগের তিন জেলা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের নেতৃবৃন্দও ছাড়াও ভার্চুয়ালি মতবিনিময় সভায় যোগ দেন সিলেট নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের সুপার ফাইভ অর্থাৎ সভাপতি, সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহ সধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক, সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।
এএফ/০৯