জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় হাওরে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ৩০, ২০২৫
০৬:২৮ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ৩০, ২০২৫
০৮:৩৪ অপরাহ্ন



জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় হাওরে ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি


জয়বায়ু পরিবর্তনে হাওর অঞ্চল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মন্তব্য করে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ চেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। হাওর রক্ষায় করণীয় তুলে ধরে তারা বলেন, ‘হাওর অঞ্চলে মাছের প্রজননকালীন সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখা এবং ঐ সময় জেলেদের প্রনোদনা প্রদানসহ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। 

শুক্রবার (৩০ মে) বেলা তিনটায় সিলেট নগরের জিন্দাবাজারে ইমজা হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব দাবি তুলে ধরেন। পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।

শিক্ষাবিদ আবুল ফতেহ ফাত্তাহ’র সভাপতিত্বে ও পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রজত সরকারের পরিচালনায় সভায় মুখ্য আলোচকের বক্তব্য দেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ও এনভারমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ডঃ মোস্তাক আহমদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কাসমির রেজা। 

বিশেষ আলোচকের বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক  মাহমুদা সুলতানা, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহাদাত চৌধুরী, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সাবেক পরিচালক শহীদুল ইসলাম সোহেল প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধে কাসমির রেজা ১৬ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এতে হাওর এলাকার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দাবি ছাড়াও রয়েছে- হাওর অঞ্চলে মাছের প্রজননকালীন সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রাখা, ঐ সময় জেলেদের প্রণোদনা প্রদান, বজ্রপাতে হতাহতের সংখ্যা কমাতে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার জন্য এ বছর বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা, সুনামগঞ্জে একটি পূর্ণাঙ্গ আবহাওয়া অফিস স্থাপন, হাওরের বিদ্যালয়ের জন্য সরকারিভাবে নৌকা বরাদ্দ করা, হাওরের গ্রামগুলোকে ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা করতে গ্রাম প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ,  ফসল রক্ষা বাধেঁর বিকল্প হিসেবে হাওরের নদী ও বিল ক্যাপিটাল ড্রেজিং করা, স্বল্প জীবনের ধান আবিস্কারের জন্য গবেষণা ও আবিষ্কৃত ধান কৃষকের কাছে পৌঁছে দিতে বাজেট বরাদ্দ রাখা, হাওরের উন্মুক্ত জলাশয় লিজ দেওয়া বন্ধ করা এবং অভয়াশ্রমগুলো সংরক্ষণ, সরাসরি হাওরের প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে উপযুক্ত মূল্যে সরকারিভাবে অধিক হারে ধান কেনা, হাওরের পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় টেকসই কর্মসূচী গ্রহণ, উড়াল সেতু, সীমান্ত সড়কসহ চলমান প্রকল্প সমুহের জন্য বরাদ্দ নিশ্চিত করা, হাওর অঞ্চলে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা সকল হাওর উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য হাওর ভাতা চালু করা, হাওরে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, কৃষির পাশাপাশি শিল্প ও সেবা খাতের প্রসার ঘটানো, হাওরে বেকারত্ব রোধে বিকল্প কর্মসংস্থানের সৃষ্টি ও পরিবেশ বান্ধব এবং কমিউনিটি ভিত্তিক পর্যটনের ব্যবস্থা করা। একই সাথে হাওরের সকল প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

প্রধান আলোচক অধ্যাপক ড. মোস্তাক আহমেদ বলেন, উন্নয়নের নামে আমরা যেন হাওরের ক্ষতি না করি। তিনি বলেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যেন একটা গতানুগতিক বিশ্ববিদ্যালয় না হয়, হাওরের বিষয়গুলো নিয়ে যেন অধ্যয়ন ও গবেষণা হয়।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, ‘টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে যদি হাওর এগিয়ে যায় দেশও এগিয়ে যাবে। তিনি পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা প্রস্তাবিত দাবি বাস্তবায়ন হলে কিছুটা হলেও হাওরের মানুষের দুর্ভোগ কমবে।’


এএফ/০২