মার্কিন কবি লুইস গ্লুক পেলেন সাহিত্যে নোবেল

সিলেট মিরর ডেস্ক


অক্টোবর ০৮, ২০২০
০৯:১৬ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৮, ২০২০
০৯:১৭ অপরাহ্ন



মার্কিন কবি লুইস গ্লুক পেলেন সাহিত্যে নোবেল

তাঁর অসামান্য কাব্যভাষ্য ও দার্শনিক সৌন্দর্যবোধ ব্যক্তি সত্ত্বাকে সার্বজনীন করে তোলে। সেই বিবেচনা থেকে চলতি বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন মার্কিন কবি লুইজ গ্লুকে। 

আজ বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) সাহিত্যে নোবেল প্রাপকের নাম ঘোষণা করার সময় অ্যাকাডেমির নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান অ্যান্ডার্স অলসন জানিয়েছেন, ‘গ্লুকের ভাষ্য মধুর এবং আপসহীন। তার কবিতা পড়লেই বোঝা যায় যে, তিনি নিজেকে প্রাঞ্জল করতে সচেষ্ট। একই সঙ্গে তার লেখায় পাওয়া যায় হাস্যরস ও তীক্ষ্ণ কৌতুকের সংমিশ্রণ।’

নোবেল কমিটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গ্লুকের ‘সহজবোধ্য কবিকণ্ঠ যেটি নিরাভরণ সৌন্দর্যের সঙ্গে ব্যক্তির অস্তিত্বকে সর্বজনীন করে তোলে।’ এজন্য তাকে চলতি বছর নোবেল সাহিত্য পুরস্কার দেয়া হয়েছে। ১৯৬৮ সালে ‘ফার্স্টবর্ন’ কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে সাহিত্য জগতে আত্মপ্রকাশ করেন লুইজ গ্লুক। এরপর তিনি দ্রুত আমেরিকার সমকালীন সাহিত্যজগতে শীর্ষস্থানীয় কবিদের মধ্যে স্থান করে নেন।

১৯৪৩ সালে নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া গ্লুক বাস করছেন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ক্যামব্রিজে। লেখালেখির পাশাপাশি ইয়ালি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনা করছেন তিনি। ১৯৯৩ সালে পুলিৎজার পুরস্কার এবং ২০১৪ সালে ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন গ্লুক।

গ্লুকের এ পর্যন্ত ১২টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যেকটি কাব্যগ্রন্থেই নির্মলতার জন্য সংগ্রামের চিত্র উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, গত ১০০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে ১৫ জন নারী সাহিত্যে নোবেল পেয়েছেন। তবে গ্লুককে নিয়ে এই সংখ্যা হলো ১৬। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাকে জাতীয় মানবাধিকার পুরস্কারে ভূষিত করে।

লুইস গ্লুকের জন্ম ১৯৪৩ সালে, নিউইয়র্কে। তিনি ক্যামব্রিজে বসবাস করেন। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি শিক্ষকতায়ও যুক্ত। কানেকটিকাটের নিউ হেভেনের ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত এই কবি। 

তার প্রথম কবিতার বই 'ফার্স্টবর্ন' প্রকাশ পায় ১৯৬৮ সালে। এর পরপরই সমকালীন আমেরিকান সাহিত্যাঙ্গনে কবি হিসেবে তিনি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেন। 

নোবেলজয়ের আগে তিনি পুলিৎজার প্রাইজ (১৯৯৩) ও ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড-সহ (২০১৪) বেশ কিছু মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন।

এ পর্যন্ত ১২টি কবিতার বই এবং কয়েকটি কবিতাকেন্দ্রিক প্রবন্ধের বই প্রকাশ পেয়েছে তার। কবিতার বইগুলো হলো: ফার্স্টবর্ন (১৯৬৮), দ্য হাউস অন মার্শল্যান্ড (১৯৭৫), দ্য গার্ডেন (১৯৭৬), ডিসেনডিং ফিগার (১৯৮০), দ্য ট্রায়াম্ফ অব অ্যাকিলিস (১৯৮৫), অ্যারার‍্যাট (১৯৯০), দ্য ওয়াইল্ড আইরিশ (১৯৯২), দ্য ফার্স্ট ফোর বুকস অফ পোয়েমস (১৯৯৫), মিডোল্যান্ডস (১৯৯৬), ভিটা নোভা (১৯৯৯), দ্য সেভেন এইজেস (২০০১), অক্টোবর (২০০৪), অ্যাভার্নো (২০০৬), অ্যা ভিলেজ লাইফ (২০০৯), পোয়েমস ১৯৬২-২০১২ (২০১২) এবং ফেইথফুল অ্যান্ড ভার্চুয়াস নাইট (২০১৪)।

এর আগে, ২০১৮ সালে একটি যৌন হয়রানির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার ঘোষণা স্থগিত করার পর, গত বছর একসঙ্গে দুই বছরের পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। অবশ্য, ২০১৯ সালে পিটার হান্ডকে-কে বিজয়ী ঘোষণা করায় আবারও সমালোচনার মুখে পড়ে নোবেল কমিটি। অস্ট্রিয়ান এই সাহিত্যিক বসনিয়ার যুদ্ধে সার্ব বাহিনীর নৃশংসতা অস্বীকার করেন এবং যুদ্ধপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সার্বিয়ার সাবেক রাষ্ট্রপতি স্লোবোদান মিলোসোভিচের সমর্থক হওয়ায় নানা মহলে নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানানো হয়।

তাই কে পাবেন এ বছর সাহিত্যে নোবেল, এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা জল্পনা-কল্পনা চলছিল। অবশেষে এর অবসান ঘটিয়ে শেষ হাসি হাসলেন লুইস গ্লুক।

 

 

এএফ/০৪