ধর্মপাশায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বিশুদ্ধ খাবার পানির দুর্ভোগ

ধর্মপাশা প্রতিনিধি


আগস্ট ১২, ২০২১
০৫:৩৯ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ১২, ২০২১
০৫:৪৩ অপরাহ্ন



ধর্মপাশায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বিশুদ্ধ খাবার পানির দুর্ভোগ

সরকারি অর্থায়নে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আতওায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মধ্যে ৩০০টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।

এসব ঘরে বসবাসকারীদের জন্য  বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ অবস্থায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে এ উপজেলার চারটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের ৩০০টি পরিবারের মানুষজনকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। 

 উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২ এর আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে এ উপজেলার জয়শ্রী, চামরদানী,মধ্যনগর ও পাইকুরাটি ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামে ৩০০টি গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য ৩০০টি ঘর বরাদ্দ পাওয়া যায়। 

প্রতিটি ঘর নির্মাণ  বাবদ এক লাখ ৭১হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় । চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি এসব ঘর উদ্বোধন করা হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সুবিধাভোগীদের মধ্যে  এসব ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

ঘর নির্মাণ করা হলেও এসব পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এতে করে  এসব পরিবারের লোকজনকে দীর্ঘদিন ধরে খাবার পানির চাহিদা মেটাতে গিয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।          

আজ বৃহস্পতিবার (১২আগস্ট) দুপুরে উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের মলয়শ্রী, গোপীনগর ও দুর্গাপুর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে,  এসব গ্রামে ভূমিহীন ও গৃহহীনরা সরকারিভাবে অর্থায়নে নির্মিত নতুন ঘরে বসবাস করলেও তাঁদের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে খাবার পানির চাহিদা মেটাতে এসব পরিবারের সদস্যদেরকে দূর থেকে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে।

জয়শ্রী ইউনিয়নের মলয়শ্রী গ্রামের বাসিন্দা বিধবা দিপালী রানী (৬০) বলেন, স্বামী হারাইছি ১০ বছর আগে। একটা মাইয়া লইয়া খুব কস্টে  দিন কাডাইছি। আমরার নিজেরার বাড়িঘর কিছুই আছিইননা।মাইনসের বাড়িতে কুনুরহমে থাকছি। প্রধানমন্ত্রী নতুন ঘর দিছইন ।হেই ঘর ফাইয়া আমি খুউব খুশি। কিন্তু কলের (নলকূপ) ব্যবস্থা না থাহায় হানি (পানি) ২০বাড়ি ফার (পার) অইয়া হানি আনতে গিয়া খুউব কষ্ট অইতাছে। কলের ব্যবস্থা করলে উফকার অইলয়।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ধর্মপাশা উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারি প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের নতুন ঘর পাওয়া সুবিধাভোগীদের জন্য পানির উৎস স্থাপন/গভীর নলকূপ স্থাপন প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামুল্যে এ উপজেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ৩০০টি পরিবারের জন্য ৩৬টি গভীর নলকূপ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আমরা  এ নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছি। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যে   এসব গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা দূর হয়ে যাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো.মুনতাসির হাসান  ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন  রোকন বলেন, এ উপজেলায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের খাবার পানির সমস্যা সমাধানে জনস্বাস্থ্য  বিভাগ থেকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এখানকার ১৫টি গ্রামে ৩৬টি গভীর নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি খাবার পানির সমস্যা থেকেই যায় তাহলে এডিবিসহ অন্যান্য সরকারি বরাদ্দ থেকে  গভীর নলকূপ স্থাপনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এস এ/বি এন-০৮