নিউ ইয়র্কে পুলিশের গু লি তে বাংলাদেশি তরুণ নিহত

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ২৮, ২০২৪
০১:৫১ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২৮, ২০২৪
০২:২৯ অপরাহ্ন



নিউ ইয়র্কে পুলিশের গু লি তে বাংলাদেশি তরুণ নিহত


যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ওজোন পার্কে পুলিশের গুলিতে ১৯ বছর বয়সী বাংলাদেশি এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় সময় বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। ওই তরুণের নাম উইন রোজারিও। দুপুর দেড়টার দিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ইয়েন রোজারিও’র মা নিজ বাড়ি থেকে ছেলের অনিয়ন্ত্রিত আচরণের বিষয়ে পুলিশের জরুরি নম্বর ৯১১ এ ফোন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ সাহায্যের চেষ্টা করলে ওই যুবক পুলিশকে লক্ষ্য করে কাঁচি চালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় আত্মরক্ষার জন্য গুলি চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। 

বাংলাদেশে ইয়েন রোজারিওর বাড়ি গাজীপুরের পুবাইলে। বাবার নাম ফ্রান্সিস রোজারি। মা-বাবা ও এক ভাইসহ তারা দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কের ওজোন পার্ক এলাকায় বসবাস করে আসছেন। পুলিশের গুলিতে উইন রোজারিও’র নিহতের খবরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে শোকের পরিবেশ নেমে আসে। প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত দাবি করেছেন।

পুলিশের বক্তব্যকে উদ্ধৃত করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন বলছে, বুধবার দুপুরের দিকে জরুরি টেলিফোন নম্বর ৯১১ থেকে পুলিশের কাছে ফোন আসে। ফোনে জানানো হয়, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছেন। খবর পেয়ে ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের ওই বাড়িতে যায় পুলিশ। বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভেতরে তাকে দেখতে পায় পুলিশ। তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করলে ওই যুবক হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে পুলিশ সদস্যদের দিকে তেড়ে আসে। এ সময় গুলি চালায় পুলিশ।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পথচারী কেন ক্লার্ক বলেন, ‘তিনি গুলির শব্দ শুনেছেন। তিনি প্রথমে পুলিশকে ওই বাড়িতে যেতে দেখেছেন, দরজায় টোকা দিতে দেখেছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের ভেতরে যেতে দেখেছেন। তারপর তিনি চিৎকার শুনেছেন। পরে গুলির শব্দ সবাই শুনেছেন। তারপর কিছুটা নীরবতা এবং আবারও গুলির শব্দ শুনেছেন।’




নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ অব পেট্রোল জন চেল জানিয়েছেন, ওই যুবক হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তেড়ে আসছিল পুলিশ সদস্যদের দিকে। সেখানে উদ্ধার অভিযানে পুলিশ তাদের ডিভাইসগুলো মোতায়েন করেছিল যা কাজও করছিল। কিন্তু যুবকের মা তখন তাকে সাহায্যে এগিয়ে এসেছিলেন এবং তার (উইন রোজারিও) হাতে থাকা কাঁচিতে আঘাত করে কাঁচি ফেলে দেন। এ সময় ওই যুবক আবার কাঁচি হাতে তুলে নেয় এবং পুলিশ অফিসারদের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার জন্য গুলি করা ছাড়া পুলিশের কোনো উপায় ছিল না। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

এ বিষয়ে নিউইয়র্ক পুলিশ কর্মকর্তারা আরও জানান, অফিসাররা যখন ১০৩ স্ট্রিট ও ১০১ অ্যাভিনিউয়ের ওই বাড়িতে পৌঁছে তখন কাঁচি হাতে থাকা উইন রোজারিওর মুখোমুখি হয়েছিল পুলিশ। কর্মকর্তারা তাকে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার এবং তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করে। কিন্তু সাহায্য নেওয়ার পরিবর্তে বাসার ড্রয়ার থেকে এক জোড়া কাঁচি বের করেন এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পুলিশ প্রথমে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় রান্নাঘরে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় তার মা তাকে সাহায্যের জন্য চলে আসেন। পুলিশ কর্মকর্তারা তখন তাদের জানান যে, তিনি দুর্ঘটনাক্রমে তার শরীর থেকে পুলিশের মোতায়েন করা ডিভাইসগুলো ছিটকে ফেলে দিয়েছেন। এতে পুলিশ সদস্যদের অকার্যকর করে তুলেছেন তিনি। ওই যুবক তখন কাঁচি তুলে নিয়ে আবার অফিসারদের দিকে ছুটে আসলে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়। 

জন চেল বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ অফিসারদের কেউ আহত হয়নি। তবে কানে আঘাত পাওয়ায় একজনকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশের দাবি, নিহত তরুণ মাদকাসক্ত এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশি কমিউনিটিতে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।


এএফ/০২