লকডাউনের দিনগুলি

ঐন্দ্রিলা নাথ ঐশী


জুন ২০, ২০২০
১২:৪৮ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ২০, ২০২০
১২:৪৮ পূর্বাহ্ন



লকডাউনের দিনগুলি

ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে শেষ হয় এসএসসি পরীক্ষা । তারপর শুরু হয় আমাদের স্বেচ্ছা লকডাউন। বাসায় আছি প্রায় চার মাস হয়ে গেল। নানা কাজে কাটছে এই স্বেচ্ছা লকডাউনের দিনগুলো। 

গত বছর বইমেলা থেকে যে বইগুলো কিনে রাখা হয়েছিল, কয়েকটি পড়া বাকি ছিল। পড়া হয়নি মূলত পরীক্ষার জন্য। প্রথমেই সেই বইগুলো পড়ে শেষ করেছি। সংগ্রহের ঝুলি শেষ হলে অনলাইন থেকে পড়েছি। তারপর ভাবলাম এবার একটা রুটিন করা উচিত। শুরু হলো রুটিন মাফিক কাজ। দিন শুরু হয় গানের রেওয়াজে। শেষ হয় ডায়েরি লেখার মধ্য দিয়ে। গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তিসহ পছন্দের বিষয়গুলো চর্চা চলছে প্রতিদিন নিজের মতো করেই। মাকেও রান্নার কাজে সাহায্য করছি। এই সুযোগে মায়ের স্পেশাল কিছু রান্নার রেসিপিও শিখে ফেললাম। সেই সঙ্গে অবশ্য চলছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং। মা, বাবা ও ছোট বোনের সঙ্গে সময় কাটছে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় মুহূর্ত কাটছে কাজিন ছোট্ট পরম আর পড়শীর সঙ্গে। 

দক্ষতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি দাবা খেলায়। পরিবারের ছোটদের সময় দিচ্ছি লুডু খেলায়। বাংলা, ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় সিনেমা দেখাও চলছে নিয়মিত। বাদ যাচ্ছে না বিভিন্ন বিষয়ের অনলাইন ক্লাসগুলো। অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করছি। এরমধ্যে অন্যতম হলো  ‘চারুবাক’ এর রবীন্দ্রজয়ন্তী উপলক্ষে আবৃত্তি উপস্থাপন। পাঠশালা’র নিয়মিত আয়োজন ‘পাখি সব করে রব’ অনুষ্ঠানে গান ও আবৃত্তি উপস্থাপন। প্রিয় লেখকদের বই পড়ার পাশাপাশি, নিজেও প্রতিদিন কিছু লেখার চেষ্টা করছি। জাফর ইকবাল স্যার আমার প্রিয় লেখক। তাঁর বই বেশি পড়ছি। তবে বারীন্দ্রকুমার দাশের উজান-ভাটি (এক শিক্ষকের আত্মস্মৃতি) বইটি আমাকে ভীষণ নাড়া দিয়েছে। বাবা বইটি কিনে আনার পর এক নজর চোখ বুলিয়েছিলাম। কিছুদিন আগে বইটি মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। আপ্লুত হয়েছি। আমার  পড়–য়া অনেক বন্ধুদের বইটি পড়তে বলেছি। 

নিজের পছন্দের  কাজ নিজের মতোই করছি। আসলে এসব কাজ আনন্দে বেঁচে থাকার জন্য। আমার বন্ধুরাও নিশ্চয় তাদের মতো কাটাচ্ছে এই ‘করোনার কাল’। সব শেষ কথা হলো, এত কিছুর পরও যখন অনলাইন পত্রিকা আর টেলিভিশনের সংবাদ দেখি তখন আঁতকে উঠি। অপেক্ষায় আছিÑকবে শেষ হবে এই  বিভীষিকাময় সময়। করোনা ভাইরাসমুক্ত পৃথিবী দেখতে উন্মুখ হয়ে আছি।

 

লেখক : শিক্ষার্থী